ইসিতে বিএনপির মারামারি কেন্দ্র দখলের টেস্ট ম্যাচ: হাসনাত

2 weeks ago 9

সংসদীয় আসনের সীমানা পুননির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শুনানিতে বিএনপির মারামারির ঘটনাকে ভোটকেন্দ্র দখলের টেস্ট ম্যাচ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

রোববার (২৪ আগস্ট) বিকেলে নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন পিক অ্যান্ড চুজ ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে আমরা সবসময় প্রশ্নবিদ্ধ করেছি। আজকে ন্যক্কারজনক ঘটনাটি পুরো বাংলাদেশ সাক্ষী হয়েছে- আগামী নির্বাচন কেমন হতে পারে এবং সেই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা কি হবে এবং বিএনপি কি ভূমিকা রাখবে আজকে সেটি প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপির একজন নেত্রী বলছেন- আমরা চাইলে এখানে গুণ্ডা নিয়ে আসতে পারতাম। অর্থাৎ গুণ্ডার পৃষ্ঠপোষকতা তারা দিয়ে আসছেন। আমরা দেখছি নির্বাচন কমিশনের বাইরে লাঠিসোটা নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশন অফিসের যদি এই অবস্থা হয়, সারাদেশে বিএনপির যারা রয়েছে, এই গুণ্ডাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে-তারা কীভাবে ভোট কেন্দ্র দখল করবে সেটির টেস্ট ম্যাচ হয়ে গেছে।

এনসিপি নেতা বলেন, হাসিনা বলতো ২০টি হোন্ডা, ১০টি গুণ্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা। রুমিন ফারহানা শেখ হাসিনার কাছে ফ্লাটের জন্য আবেদন করেছেন, তিনি হাসিনার পতনে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছেন। রুমিন ফারহানা সবসময় বলেন বিগত ১৫ বছর নাকি তিনি অনেক ভালো ছিলেন। অবশ্যই তিনি ভালো থাকবেন, কারণ তিনি সব ধরণের আওয়ামী সুবিধা নিয়েছেন।

হাসনাত বলেন, আজকে নির্বাচন কমিশন যে ভূমিকা রেখেছেন, আমরা সেই ভূমিকাকে সবসময় প্রশ্নবিদ্ধ করে এসেছি। এখানে আমরা পুলিশকে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে দেখেছি। পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদেরকে কিভাবে নির্বাচন কমিশনে ঢুকতে বাধা দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে কিভাবে ফ্রি এক্সিট দিয়েছে। এই নির্বাচন কমিশন কতিপয় পার্টির অফিস হয়ে গেছে।

এনসিপি নেতা বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে আমরা যেতে চাই। দেশের মানুষ গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আবার গুণ্ডাতন্ত্রের দিকে যেতে চায় না। গ্রহণযোগ্য অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য এই নির্বাচন কমিশনকে আমরা বস্তুনিষ্ঠ-পেশাদারিত্বের ভূমিকায় দেখতে চাই। নির্বাচন কমিশন যেভাবে একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে নির্লজ্জের মত কাজ করছে, সেটি আমরা যে নির্বাচনমুখী হচ্ছি সেটির অন্তরায় বলে মনে করছি।

পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগের রাতে যেই পুলিশরা টাকা খেয়ে নির্বাচন করে দিয়েছে তাদের আজকে পরিণতি কি হয়েছে আপনারা দেখেছেন। জনগণের পক্ষে থাকেন, জনগণ আপনাদের বাঁচাবে। কোনো রাজনৈতিক দল আপনাদের শেল্টার দিতে পারবে না।

আজকের ঘটনার বিষয়ে ইসিতে অভিযোগ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়ে যাব এবং পর্যবেক্ষণ করব নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেয়।

এনপিসির যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, আমরা শুরু থেকেই বলেছি-এই নির্বাচন কমিশনের ইট থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তার প্রমাণ দেখতে পেয়েছি এখানে। ইসির উপস্থিতিতে আমাদের দলের সর্বোচ্চ সিনিয়র নেতাদের হামলা করা হয় এবং ইসির সামনে আমাদের নেতাদেরকেহামলা করে সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে বের হয়ে যায়।

হাসনাত বলেন, আমরা ইসির কাছে কোনো দয়া চাইতে আসিনি। ইসি যদি কোনো দলীয় কর্মীর মত আচরণ করেম বিএনপির দপ্তর সম্পাদকের ভূমিকা পালন করে, নয়া পল্টনের পরোয়ানা এখানে পালন করতে চায়, আমরা সেটি বাংলাদেশে হতে দেবো না। আমরা বারবার বলেছি এই নির্বাচন কমিশন বিএনপির দপ্তর সম্পাদকের, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব না। যার প্রমাণ, ইসির সামনে এনসিপির সর্বোচ্চ নেতাদের হামলা।

এমওএস/এনএইচআর/জেআইএম

Read Entire Article