ঈদের দিনেও সড়কে নামলেন শিক্ষক নিবন্ধনে নিয়োগবঞ্চিতরা

3 months ago 33

পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ কুরবানিসহ সবাই যখন যে যার কাজে ব্যস্ত সেই আনন্দের দিনে দাবি আদায়ে রাজপথে নেমেছেন একদল চাকরিপ্রার্থী। তাদের দাবি বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) দেরিতে ফল প্রকাশ করায় ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করেও বয়স জটিলতায় তারা নিয়োগবঞ্চিত হয়েছেন।

সোমবার (১৭ জুন) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ১৭তম নিবন্ধনে উত্তীর্ণ ও নিয়োগবঞ্চিত অর্ধশত চাকরিপ্রার্থী।

তারা বলছেন, এনটিআরসিএ দেরিতে ফল প্রকাশ করায় ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনে পাস করা অনেক চাকরিপ্রার্থীর বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম করেছে। প্রতি বছর একবার পরীক্ষা নেওয়া ও ফল প্রকাশের নিয়ম থাকলেও ২০২০ সালের পরীক্ষার ফল দেওয়া হয় ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। এতে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষায় পাস করা অনেকের বয়স ৩৫ বছর পার হয়েছে। বয়সসীমা শিথিল করে চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ পেতে মানববন্ধন করছেন এসব প্রার্থী।

আরও পড়ুন:

ঈদের দিনেও কেন মানববন্ধন করছেন জানতে চাইলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে চাকরিপ্রার্থীদের কয়েকজন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা চাকরিপ্রত্যাশী, ছেলে-মেয়েরা আমাদেরকে জিজ্ঞেস করে তোমাদের চাকরির কী খবর? তখন আমরা তাদের কাছে কোনো জবাব দিতে পারি না। এমন লজ্জা এবং কষ্ট নিয়ে ঈদের দিনে রাস্তায় নেমেছি।

চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে মানববন্ধনে ছিলেন ইউসুফ ইমন, মোহাম্মদ এনামুল হক, উত্তম সরকার, জমির উদ্দিন, নাজমুল হুদা, রেজা খান, হিমেল ও আরিফ খান। তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের।

উত্তম সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের সার্কুলার হয় ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ও এনটিআরসিএ’র গড়িমসির কারণে এ পরীক্ষা আয়োজন শেষ করতে চার বছরের বেশি সময় গেছে। সবশেষ গত বছর ২৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত ফলাফল হয়। এরইমধ্যে এনটিআরসিএ’র তথ্য মতে আমাদের ৭৩৯ জন চাকরিপ্রার্থীর বয়স ৩৫ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এতে আমাদের কোনো দোষ নেই। এনটিআরসিএ সঠিক সময়ে ফলাফল প্রকাশ করলে আমাদের বয়স ৩৫ বছর পার হতো না। এর দায় কি আমাদের? বয়সের বাঁধাধরা নিয়মের কারণে আমরা ৫ম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারিনি। আমাদের নামেমাত্র সনদ দেওয়া হয়েছে। চাকরি না পেলে সনদ দিয়ে কী করবো?

আরও পড়ুন:

অপর চাকরিপ্রার্থী রেজা খান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৯৬ হাজার ৭৩৬ শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের ৫ম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ১৬ ও ১৭তম নিবন্ধনধারী ২৪ হাজারেরও কম প্রার্থী আবেদন করেছেন। অথচ এনটিআরসিএ’র নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করেও আমাদের কপাল পুড়েছে।

মানববন্ধনে তারা বলেন, ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৭৩৯ জন একটি বিজ্ঞপ্তিতেও আবেদনের সুযোগ পাচ্ছি না। ২০২০ সালের সার্টিফিকেট ২০২৪ সালে পাওয়ার পর যদি একবারও আবেদন করতে না পারি, তাহলে আমাদের মানবাধিকার লংঘন হওয়ার পাশাপাশি সার্টিফিকেট এবং মেধারও অবমূল্যায়ন হচ্ছে। আমাদের দাবি, গণবিজ্ঞপ্তিতে আমাদের নিয়োগের সুযোগ করে দেওয়া হোক।

হতাশা প্রকাশ করে তারা বলেন, অন্যান্য গণবিজ্ঞপ্তিতে বয়সের ছাড় থাকলেও তাদেরকে সে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এতে সকল দায় এনটিআরসিএ’র তাই তারা বয়সের ছাড় দিয়ে আবেদনের সময়সীমা বৃদ্ধির দাবি জানান।

এফএইচ/এসএইচএস/এমএস

Read Entire Article