হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এক বিতর্কিত চুক্তি করেছে উগান্ডা। গত বৃহস্পতিবার উগান্ডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করার পর থেকেই দেশটির ভেতরে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনা শুরু হয়েছে। যদিও উগান্ডা একে “অস্থায়ী ব্যবস্থা” বলছে, তবু শর্তাবলি নিয়ে সরকার কঠিন চাপের মুখে পড়েছে। খবর আলজাজিরার।
চুক্তি ঘোষণার পর প্রেসিডেন্ট ইয়োওয়েরি মুসেভেনি নিজ দেশেই সমালোচনার শিকার হন। বিরোধীদের দাবি, এটি দেশবিরোধী ও বিতর্কিত চুক্তি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অর্থনৈতিক সংকট ও বাণিজ্যিক সুবিধার আশাতেই উগান্ডা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পেছনে মূল কারণ ট্রাম্প সরকারের আরোপ করা ১৫ শতাংশ শুল্ক।
দীর্ঘদিন ধরে উগান্ডা যুক্তরাষ্ট্রে কফি, ভ্যানিলা, কোকো বিন এবং পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য রপ্তানি করে আসছিল। কিন্তু অতিরিক্ত শুল্কের কারণে রপ্তানি খাত বড় ধাক্কা খায়। পরিস্থিতি সামাল দিতেই উগান্ডা মার্কিন শর্ত মেনে নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মধ্যে বাণিজ্য ও অভিবাসন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেওয়া তৃতীয় দেশের অবৈধ অভিবাসীদের উগান্ডায় পাঠানো হবে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো একে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও মানবাধিকারের পরিপন্থি বলছে। এর আগে ২০২৩ সালে উগান্ডায় সমকামিতাবিরোধী আইন পাসের পর থেকেই দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়।
বর্তমানে উগান্ডায় প্রায় ১৭ লাখ শরণার্থী অবস্থান করছে। এদের অধিকাংশ এসেছে দক্ষিণ সুদান, সুদান ও কঙ্গো থেকে। জাতিসংঘ একসময় উগান্ডার উন্মুক্ত দরজা নীতির প্রশংসা করলেও সাম্প্রতিক সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও রাজনৈতিক দমন-পীড়নের অভিযোগ তুলেছে।
উগান্ডার আগে এসওয়াতিনি, রুয়ান্ডা ও দক্ষিণ সুদান একই ধরনের চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। এসওয়াতিনি ইতোমধ্যে পাঁচজন অভিবাসী গ্রহণ করেছে এবং এর বিনিময়ে বিশেষ শুল্ক ছাড় পাচ্ছে। দক্ষিণ সুদান নিয়েছে ৮ জন, রুয়ান্ডা ২৫০ জনকে গ্রহণে সম্মত হয়েছে। এছাড়া এল সালভাদর, কোস্টারিকা ও পানামাও আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাসিতদের গ্রহণ করেছে।