উত্তাল ঢেউ, ঝড়-বৃষ্টি, আর মাঝনদীতে হঠাৎ আসা স্রোতের তোড়, এসব পেরিয়ে প্রতিদিন চাঁদপুর শহর থেকে মেঘনা নদীর পশ্চিমের প্রায় ২০টি চরে যাতায়াত করেন হাজারো মানুষ। জীবিকার প্রয়োজনে তারা বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এ পথ বেছে নিচ্ছেন। কিন্তু যাত্রীবাহী ট্রলারগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে নেই বললেই চলে।
বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বেশি থাকলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। নৌ-নিয়ম মানতে অনাগ্রহী অনেক মাঝি ও চালকের বেপরোয়া আচরণ যাত্রীদের আতঙ্ক বাড়িয়ে দেয়। সরকারি উদ্যোগে দেওয়া লাইফ জ্যাকেট ও বয়া থাকলেও অধিকাংশ সময় সেগুলো ব্যবহার হয় না। বর্ষা মৌসুমে বা দুর্যোগকালে এ অবহেলা মৃত্যু ঝুঁকিকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে। প্রতিদিন শতাধিক যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রলার চাঁদপুর শহর থেকে চরাঞ্চলে যাতায়াত করে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় প্রায় দুর্ঘটনার শিকার হয় এসব ট্রলার।
চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, আমরা বাধ্য হয়ে এ ঝুঁকি নিচ্ছি। নদী পাড়ি ছাড়া আমাদের জীবিকা চলে না। কিন্তু মাঝিরা যেভাবে ট্রলার চালায়, মনে হয় যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। লাইফ জ্যাকেট চাইলে অনেক সময় রেগে যায়। যেগুলোতে আছে অধিকাংশ অকেজো।
মাদরাসাশিক্ষক নুর মোহাম্মদ বলেন, শুধু বর্ষা মৌসুমে যাতায়াত করতে সমস্যা হয়। এ সময় নদী উত্তাল এবং প্রচণ্ড স্রোত থাকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বর্ষাকালে নদীতে বিশেষ টহল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
চাঁদপুর নৌ থানার উপপরিদর্শক (সেকেন্ড অফিসার) বিল্লাল আল আজাদ বলেন, মূলত যাত্রীবাহী ট্রলারগুলোর নজরদারির দায়িত্ব বিআইডব্লিউটিএর। তারা অভিযান করলে নৌ পুলিশ সহযোগিতা করে। নিয়ম নীতি বিআইডব্লিউটিএ থেকে নির্ধারণ করা আছে।
চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক (ট্র্যাফিক) বাবু লাল বৈদ্য বলেন, যাত্রীবাহী ট্রলারগুলো স্থানীয় ইজারাদার মনিটরিং করে। তারপরও আমরা নিয়মনীতি মেনে চলার নির্দেশ দিয়ে থাকি। বিশেষ করে কোস্ট গার্ড ও নৌ পুলিশ সার্বক্ষণিক নজর রাখছে। ট্রলারে লাইফ জ্যাকেট ও বয়া ব্যবহার প্রসঙ্গে কথা বলেননি এ কর্মকর্তা।
শরীফুল ইসলাম/আরএইচ/এএসএম