স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের সামগ্রিক রপ্তানি ৬ শতাংশ কমতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস)।
বিআইডিএসের চার দিনব্যাপী ‘অ্যানুয়াল বিআইডিএস কনফারেন্স অন ডেভেলপমেন্ট (এবিসিডি) ২০২৪’ এর দ্বিতীয় দিনে গবেষকরা এ তথ্য তুলে ধরেন। ‘সাপ্লাই চেইন ডিনামিকস ফর সাসটেইনেবল আরএমজি গ্রোথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণায় এ ফলাফল উঠে এসেছে।
এলডিসি পরবর্তী পরিবেশে বাংলাদেশের আরএমজি সেক্টরে দক্ষ, সাশ্রয়ী সাপ্লাই চেইনের জন্য বাধা ও সমাধান চিহ্নিত করতে ৬৩টি মাঝারি ও বড় পোশাক কারখানার ওপর এ জরিপ পরিচালনা করে সংস্থাটি।
বাণিজ্যের নেতিবাচক ভারসাম্য জিডিপিকে প্রভাবিত করতে পারে। গ্র্যাজুয়েশনের পর যদি উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া) তাহলে প্রকৃত জিডিপি প্রায় ০ দশমকি ৩৮ শতাংশ কমে যেতে পারে।
- আরও পড়ুন
- ৫ মাসে রপ্তানি আয় বাড়লেও পোশাকশিল্পের প্রবৃদ্ধির হার তুলনামূলক কম
- অক্টোবরে রপ্তানি আয় ২০.৬৫ শতাংশ বেড়েছে
সমীক্ষার ফল অনুসারে, বাংলাদেশের মোট রপ্তানি প্রায় ৬ শতাংশ ও পোশাক খাতে প্রায় ১৪ শতাংশ কমতে পারে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়ে ১৯ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা গত বছর ছিল ১৭ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে রপ্তানি আয় ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার এ দাঁড়িয়েছে। গত বছরের নভেম্বর মাসে আয় হয়েছিল ৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো বুধবার (৪ ডিসেম্বর) এ তথ্য প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ যে শুল্ক ভোগ করে তা হারানোর কারণে পোশাক রপ্তানি ২০৩১ সালের মধ্যে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ কমতে পারে। শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধার পরিবর্তে ৭ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ হতে পারে।
এটি ছাড়াও সম্ভাব্য ৯ দশমিক ৬ শতাংশ শুল্কের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে টেক্সটাইল এবং পোশাকের মোট রপ্তানি কমতে পারে প্রায় ৬ দশমিক ১ শতাংশ।
জাতীয় রপ্তানিতে একক বৃহত্তম অবদানকারী আরএমজি খাত ১৬ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১৪ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার। তবে সামগ্রিক রপ্তানির তুলনায় তৈরি পোশাক শিল্পের প্রবৃদ্ধির হার তুলনামূলকভাবে কম, যা ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে সামগ্রিক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত (ডিএফকিউএফ) ব্যবস্থার অধীনে বাংলাদেশ অধিকাংশ উন্নত বাজারে শুল্কমুক্ত অগ্রাধিকার উপভোগ করবে না।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাপড়ের ওপর প্রায় ৪ শতাংশ, আধা-সমাপ্ত পোশাকের জন্য ৮ শতাংশ এবং পোশাকের জন্য সর্বাধিক পছন্দের দেশগুলির জন্য ১২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে পারে।
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর পোশাক প্রস্তুতকারকদের বৈশ্বিক বাজারে থাকার জন্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। সমীক্ষার ৩২ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, নতুন মেশিনারিজ চালু করতে আরও বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। ২৫ শতাংশ মতামত দিয়েছে লাভ খুব কম হবে। ২১ শতাংশ উত্তরদাতারা বলেছেন বাজারে প্রতিযোগিতা বেশি হবে। ২১ শতাংশ বলেছেন উৎপাদন খরচ বেশি হবে এবং ক্রেতারা অন্য দেশে চলে যেতে পারেন। ১৯ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন কাজের আদেশ কমবে।
আইএইচও/এএসএ/জিকেএস