উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ 

5 hours ago 7

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (টিসিএফ) রুহুল মোসাদ্দেকের বিরুদ্ধে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও বিগত সরকারে আমলে নিয়োগ পাওয়া ডিলারদের পুনর্বাসনসহ ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির  (ওএমএস) আওতায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৪২জন ওএমএস ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে অধিকাংশ আওয়ামীপন্থি বলে অভিযোগ ওঠে। গত ৫ আগস্ট দেশের পটপরিবর্তনে স্বৈরাচারী ও দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে আওয়ামী লীগের পদ পদবিতে থাকা অনেক ডিলার মামলার আসামি হওয়ায় আত্মগোপনে চলে যান। ইতিমধ্যে হাসানুর রহমান শাহ নামে একজন ডিলারের মৃত্যু হয় এবং চার জন ডিলার উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির শীর্ষস্থানীয় পদে থাকায় গ্রেপ্তারের ভয়ে গা ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। আর এতে ঝুঁকিতে পড়ে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি। আর সেই সুযোগটি কাজে লাগায় ডিমলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেক। 

অভিযোগ রয়েছে, ইতিপূর্বে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির ডিলার নিয়োগের সময় ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে ঘুষ নিয়ে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেক। বর্তমানেও তিনি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদ পদবিতে থাকা ও আওয়ামীপন্থি ডিলারদের পুনর্বাসন করার জন্য জনপ্রতি ডিলারের কাছ থেকে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা আদায় করেছেন। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেকের ঘুষ বাণিজ্য ও অপকর্মের বিষয়ে ডিমলা উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ গত ১৩ মার্চ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) প্রচার করে। তদন্ত সাপেক্ষে দুর্নীতিবাজ খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তারা। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নীলফামারী জেলার মুখপাত্র রাশেদুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, ডিমলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেক ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছেন। বর্তমানেও তিনি ডিমলা উপজেলার পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। 

উপজেলার ঝু্নাগাছ চাপানি ইউনিয়ন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার আব্দুস সালাম, মনিরুজ্জামান মানিক, কনেশ্বর রায় ও শফিউদ্দিন মানিকসহ অনেকে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের ঘুষ গ্রহণের কথা স্বীকার করেছেন। তাছাড়া নতুন খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি (ওএমএস) ডিলার নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে ডিসেম্বর মাসে স্থানীয় ব্যবসায়ী জহির উদ্দিনের নিকট থেকে ১ লাখ এবং মার্চ মাসে আরো ৫৫ হাজার টাকা হাওলাদের কথা বলে হাতিয়ে নেন তিনি। 

এছাড়া উপজেলার খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) নিয়োগের কথা বলে বন্দর খগাখড়িবাড়ি গ্রামের নওয়াব আলীর কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে (নগদ) নম্বরে ১৫ হাজার ও নিজহাতে ২০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

অনিয়মের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে এড়িয়ে যান অভিযুক্ত উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেক। তিনি বলেন  বলেন, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে আমার বক্তব্য জানাবো। তবে আমাকে একটি মহল ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। 

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাসেল মিয়া জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি, তবে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নীলফামারী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সৈয়দ আতিকুল হকের সাথে এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিকবার মুঠোফোনে ফোনে চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

Read Entire Article