ঋণ নেওয়ার আগে যেসব চিন্তাভাবনা জরুরি

1 week ago 16
আজকের দিনে অনেকেই বিভিন্ন কারণে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চান—ব্যবসা শুরু করতে, বাড়ি বানাতে, শিক্ষার খরচ চালাতে, বা হঠাৎ কোনো জরুরি প্রয়োজন মেটাতে। ব্যাংক ঋণ অবশ্যই একটা ভালো সমাধান হতে পারে; কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কিছু বিষয় ভালোভাবে চিন্তা করা জরুরি। আরও পড়ুন : বাংলাদেশিদের জন্য ১০ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংকিং টিপস আরও পড়ুন : বুঝে ব্যবহার করুন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড চলুন, সহজ ভাষায় জেনে নিই ঋণ নেওয়ার আগে কী কী ভাবা দরকার। ১. আসলেই কি ঋণ নেওয়া দরকার? প্রথমেই নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন—এই মুহূর্তে ঋণ নেওয়া কি একান্তই প্রয়োজন? অনেক সময় আমরা একটু চাপের মুখে বা আশপাশের মানুষের দেখাদেখি ঋণ নিয়ে ফেলি, পরে কিস্তির বোঝা টানতে হিমশিম খেতে হয়। তাই নিজের প্রয়োজন ও সামর্থ্য অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিন। ২. মাসিক আয় ও খরচ ভালো করে হিসাব করুন ঋণ মানেই প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কিস্তি হিসেবে দিতে হবে। আপনার আয় থেকে সেই টাকা নিয়মিত দিতে পারবেন তো? এটা বোঝার জন্য একটা ছোট্ট হিসাব করে নিন-  মোট মাসিক আয়—সব খরচ (বাড়ি ভাড়া, বাজার, স্কুল ফি, ইত্যাদি) = বাকি টাকা। এই ‘বাকি টাকা’ যদি ঋণের কিস্তি থেকে বেশি হয়, তবেই ঋণ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। ৩. কোন ব্যাংকের ঋণ সুবিধা সবচেয়ে ভালো? সবার আগে বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণের সুদের হার, মেয়াদ, সার্ভিস চার্জ ইত্যাদি জেনে নিন। বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিভিন্ন ধরনের ঋণ অফার করে, যেমন: আরও পড়ুন : নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক ব্যাংক নির্বাচন করবেন যেভাবে আরও পড়ুন : ব্যাংকের সুদের হার ও চার্জ সম্পর্কে সচেতন থাকুন - পার্সোনাল লোন - হোম লোন - এডুকেশন লোন - ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের  লোন একই ঋণের জন্য একেক ব্যাংক একেক রকম শর্ত দেয়, তাই তুলনা করে সবচেয়ে সুবিধাজনক অপশন বেছে নিন। ৪. ঋণের শর্তগুলো ভালোভাবে পড়ে নিন অনেকেই ঋণ নেওয়ার সময় কাগজপত্র না পড়ে শুধু সই করে দেন। এটা বিপদের কারণ হতে পারে। চুক্তিপত্রে লেখা থাকে: - সুদের হার - জরিমানা (late payment fee) - আগেভাগে ঋণ শোধ করলে কোনো অতিরিক্ত চার্জ আছে কি না এ বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝে তারপরই সাইন করুন। ৫. শুধু জামানতের কারণে ঋণ না নিন অনেক সময় আত্মীয় বা বন্ধুদের অনুরোধে জামানত দিয়ে বা কারও রেফারেন্সে ঋণ নিয়ে ফেলি। পরে দেখা যায়, তার ঋণ শোধের দায়িত্বও আপনার ঘাড়ে এসে পড়েছে। এই কারণে ভালোভাবে বুঝে, প্রয়োজন হলে কাউকে বিশ্বাস করে জামানত দিন। হুটহাট সিদ্ধান্ত নয়। ৬. সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করুন - ঋণ নিলে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করা খুব জরুরি। না করলে: - আপনার ক্রেডিট স্কোর খারাপ হবে - ভবিষ্যতে আর কোনো ব্যাংক সহজে ঋণ দেবে না - জরিমানা গুনতে হবে সাধারণত ব্যাংকগুলো মোবাইল ব্যাংকিং, চেক বা অনলাইন ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে কিস্তি নেওয়ার সুবিধা দেয়—এই সুযোগগুলো কাজে লাগান। ব্যাংক ঋণ নিতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আবার অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসেও সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়। ভালোভাবে চিন্তা করে, সবদিক বিবেচনা করে, সঠিক সময়েই সঠিক সিদ্ধান্ত নিন। আপনার সচেতন সিদ্ধান্তই পারে ঋণকে একটা সুযোগে রূপ দিতে— ঝামেলায় নয়।
Read Entire Article