একটি ফ্যান ও এক বাতির আলোয় দিন-রাত পার করেন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে দিনমজুর কাজী ছাওধন মিয়া। এতেই বিল এসেছে এক লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এমন ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল ধরিয়ে দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের সদরঘাট গ্রামে। দিনমজুর কাজী ছাওধন মিয়ার ঘরে প্রতিমাসে দুই-তিনশ টাকার বেশি বিদ্যুৎ বিল আসত না। কিন্তু জুলাই মাসে তার নামে বিদ্যুৎ বিল এসেছে এক লাখ ৬৭ হাজার ৯৫ টাকা!
বিলে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি নাকি ১০ হাজার ৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছেন। বিলম্ব ফি ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫৯৫ টাকা। অথচ জুন মাসে তার বিদ্যুৎ বিল ছিল মাত্র ১০৫ টাকা।
কাজী ছাওধন মিয়া জানান, আমার ঘরে একটি ফ্যান আর একটি বাতি ছাড়া কিছুই নেই। আমি এই বিল দেখে হতবাক হয়ে যাই। মেম্বার-চেয়ারম্যানসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে দুই দিন ধরে বিদ্যুৎ অফিসে ঘুরছি। তারা বলেছেন বিলটা ঠিক করে দেওয়া হবে।
বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিল প্রস্তুতের সময় কম্পিউটার ব্যবহারে ভুলের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
বিল প্রস্তুতকারী কর্মচারী ক্ষমা দাশ বলেন, ইচ্ছে করে নয়, কম্পিউটারের ভুলের জন্য এমনটা হয়েছে।
এ ঘটনায় নবীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম মো. আসাদুজ্জামান বলেন, দিনমজুর কাজী ছাওধন মিয়ার বিল কম্পিউটার ব্যবহারকারীর ভুলের কারণে হয়েছে। বিল প্রস্তুতকারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তার বিল ইতিমধ্যে সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ভুল হবে না।
তবে শুধু কাজী ছাওধন মিয়ার বিল নয়, চলতি আগস্ট মাসে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন বিভিন্ন উপজেলার হাজারো গ্রাহক দেড় থেকে দ্বিগুণ বিদ্যুৎ বিলে ভুক্তভোগী হয়েছেন।
দৌলতপুর গ্রামের বদরুল ইসলাম জানান, বিদ্যুৎ বিল কমানোর জন্য দু’টি মিটার লাগিয়েছি। কিন্তু এখন আগের চেয়ে আরও বেশি বিল আসে।
আরেক গ্রাহক ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, প্রতি মাসে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বিল আসত। অথচ এ মাসে এসেছে ১ হাজার ৬০০ টাকা।
একইভাবে কাজল মিয়া নামের এক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবেশীর মিটারে ১ হাজার ২২০ ইউনিট দেখালেও বিলে ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩০০ ইউনিট। এইভাবে অতিরিক্ত বিল আদায় করা হচ্ছে।