এক যুগ আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা, ৩২ ভবনে এখনো মানুষের বাস

এক যুগ আগে বরিশাল নগরীর ৩২টি পুরোনো ও জরাজীর্ণ ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে নগর কর্তৃপক্ষ। যার মধ্যে বেশিরভাগ শতবর্ষী। কিন্তু সেগুলোর বেশিরভাগ ভবনে এখনো মালিক ও ভাড়াটিয়ারা বসবাস করছেন। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে আকস্মিক ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে গোটা দেশ।  সকাল সাড়ে ১০টায় ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এ ভূমিকম্পে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ভবনের কার্নিশ ভেঙে ও দেয়াল ধসে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ছয় শতাধিক।  ঢাকা থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর মাধবদীতে এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হওয়ায় বরিশালে এর খুব একটা আঁচ লাগেনি। তার পরও কিছুটা কম্পন অনুভব করেছেন স্থানীয়রা। কিন্তু এ মাত্রার ভূমিকম্প বরিশাল বা তার আশপাশে হলে জরাজীর্ণ একটি ভবনেরও অস্তিত্ব থাকত না। প্রাণহানি ঘটত বহু মানুষের।   ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের বরিশাল সদর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রবিউল আল আমিন জানিয়েছেন, শুক্রবার বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছে। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহতের খবর রয়েছে। কিন্তু বরিশালে এমন কোনো খবর আমরা পাইনি। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে ভূমিকম্পে বরিশালে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বরিশাল সিটি করপোরেশন

এক যুগ আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা, ৩২ ভবনে এখনো মানুষের বাস

এক যুগ আগে বরিশাল নগরীর ৩২টি পুরোনো ও জরাজীর্ণ ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে নগর কর্তৃপক্ষ। যার মধ্যে বেশিরভাগ শতবর্ষী। কিন্তু সেগুলোর বেশিরভাগ ভবনে এখনো মালিক ও ভাড়াটিয়ারা বসবাস করছেন।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে আকস্মিক ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে গোটা দেশ। 

সকাল সাড়ে ১০টায় ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এ ভূমিকম্পে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ভবনের কার্নিশ ভেঙে ও দেয়াল ধসে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ছয় শতাধিক। 

ঢাকা থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর মাধবদীতে এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হওয়ায় বরিশালে এর খুব একটা আঁচ লাগেনি। তার পরও কিছুটা কম্পন অনুভব করেছেন স্থানীয়রা। কিন্তু এ মাত্রার ভূমিকম্প বরিশাল বা তার আশপাশে হলে জরাজীর্ণ একটি ভবনেরও অস্তিত্ব থাকত না। প্রাণহানি ঘটত বহু মানুষের।  

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের বরিশাল সদর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রবিউল আল আমিন জানিয়েছেন, শুক্রবার বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছে। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহতের খবর রয়েছে। কিন্তু বরিশালে এমন কোনো খবর আমরা পাইনি। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে ভূমিকম্পে বরিশালে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) নগর ভবন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে নগরীর ৩৫টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। ওই সময় নগর ভবন কর্তৃপক্ষ দাবি করে, বুয়েট পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্ট এবং ভবনের মেয়াদের ওপর নির্ভর করে ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। এরপর বিএনপির সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল মেয়র থাকাবস্থায় ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে লাল রঙের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে কাঠপট্টি রোডের একটি ভবন ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করেছে মালিকপক্ষ। সবশেষ চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর মালিকপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নগরীর সদর রোডে ঝুঁকিপূর্ণ তৃতীয়তলা বিশিষ্ট দুটি ভবন ‘সাকুর ম্যানশন ও উলফৎ ম্যানশন’ ভেঙে ফেলেছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ শাখার কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস কালবেলাকে বলেন, ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ভবনগুলোর কোনো ক্ষতি হয়নি ঠিক। তাই বলে এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ নয়, তা বলা যাবে না। কেননা ভবনগুলো দেখলেই বোঝা যায় এগুলো কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলো উচ্ছেদের বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা ভবনগুলো হলো— নগরীর কাউনিয়া এলাকার জানুকি সিংহ রোডের মতি লস্করের বাড়ি, পূর্ব বগুড়া রোড কাজি অফিসের পেছনে রবীন্দ্রনাথ সেনের ভবন, আগরপুর রোডে মনু মিয়ার ভবন, সদর রোড ফজলুল হক অ্যাভিনিউর হোটেল বাহাদুর ভবন, নিউ সার্কুলার রোডের সৈয়দ মনছুর আহমেদ ভবন, সদর রোডের শাকুর ম্যানশন, ঈশ্বর বসু রোডের সৈয়দ মঞ্জিল, হাসপাতাল রোডে মান্নান মৃধার ভবন, কালুশাহ সড়কে জালাল আহমেদের ভবন, সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের পুরাতন হোস্টেল ভবন, মেডিকেল কলেজ লেনের ফরিদ উদ্দিনের ক্ষণিকা ভবন, বিএম কলেজের সুরেন্দ্র ভবন ছাত্রাবাস, বগুড়া রোডের সালাম চেয়ারম্যানের পুরাতন ভবন, সদর রোডের পশ্চিম পার্শ্বে হাজি ইসরাইলের ভবন, হাতেম আলী কলেজের জ্ঞান-বিজ্ঞান ভবন, দক্ষিণ চকবাজার নগর ভবন সংলগ্ন জেলা পুলিশের মালখানা ও গারদখানা, সিঅ্যান্ডবি রোডের উপজেলা পরিষদের পুরাতন ভবন, সদর রোডের সৈয়দ ভবন, কাউনিয়া প্রধান সড়কের বেনী লালগুহর ভবন, রূপাতলী এলাকার নলছিটি প্লাজা, কাঠপট্টির মিল্লাত ফার্মেসি এবং একই এলাকার চন্দ্রিকা ব্রাদার্স, আহম্মদ ক্লথ স্টোর্স, জুম্মান ব্রাদার্স, অমৃত ভবন, সৈয়দ কামাল হোসেন রুবেলের ভবন, চিত্ত সাহা ভবন, সাধনা ঔষধালয় ভবন, ফজলুল হক অ্যাভিনিউয়ের গোল্ডেন টাওয়ার ভবন, হাসপাতাল রোডের মো. মনিরুজ্জামানের ভবন, বগুড়া রোডের মাহাবুব হোসেন ও মাহফুজ হোসেনের ভবন।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির কালবেলাকে বলেন, এগুলো সিটি করপোরেশনের একার মতামতে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা হয়নি। এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। যেখানে গণপূর্তসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রকৌশলী এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন। তাদের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ওই সময় ভবনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছিল কি না, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা নেই বলেন এই কর্মকর্তা।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow