সম্প্রতি ভারতের হিমাচল প্রদেশে একই নারীকে দুই ভাই বিয়ে করে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। এরপর দেশে বিদেশে এ ঘটনা ভাইরাল হয়ে যায়। এবার এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন সেই দুই ভাই। বলেছেন, সমালোচনা তাদের কোনোভাবেই প্রভাবিত করেনি। বরং তারা শতাব্দী-প্রাচীন ‘হাটি’ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যের অংশ হতে গর্ববোধ করছেন।
শিল্লাইয়ের থিন্দো পরিবারের নেগি ভাইরা কুনহাট গ্রামের সুনীতা চৌহানকে ‘জোড়িদার প্রথা’ অনুসারে বিয়ে করেন। এটি স্থানীয়ভাবে ভ্রাতৃপতিত্বভিত্তিক বহুপতি প্রথা নামে পরিচিত, যেখানে দুই ভাই একই নারীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের মতে, এই সিদ্ধান্ত শুধু ব্যক্তিগত পছন্দ নয়, বরং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি সম্মানের বহিঃপ্রকাশ।
ফেসবুকে প্রকাশিত এক ভিডিওতে প্রদীপ নেগি বলেন, এই প্রথা বহু প্রজন্ম ধরে চলে আসছে এবং চলতেই থাকবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু মানুষ গালি দিচ্ছে, তাতে আমার কিছু আসে যায় না।
তিনি জানান, এই প্রথা শুধু তাদের এলাকায় নয়, উত্তরাখণ্ডের জৌনসার-বাওয়ার অঞ্চলেও প্রচলিত, যেখানে একই নারীর সঙ্গে দুই বর মালা বদল করে বিবাহ সম্পন্ন করেন।
প্রদীপের ভাই কপিল নেগি জানান, যে তাদের এই বিবাহ সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় হয়েছে—কোনো জোরজবরদস্তি ছাড়াই। এই বন্দোবস্তে উভয় ভাই ও তাদের স্ত্রী সম্মত ছিলেন এবং পরিবারের পক্ষ থেকেও পূর্ণ সমর্থন ছিল।
প্রদীপ বলেন, আমরা আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পক্ষে কথা বলে যাবো। যারা আমাদের রীতি জানেন না, তারাও মতামত দিচ্ছেন। কিন্তু আমরা সবাই মিলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং পরিবার ও সমাজ এতে সন্তুষ্ট।
প্রদীপ আরও জানান, তারা নিম্নআয়ের পরিবার থেকে এসেছেন, সম্পত্তি সামান্য এবং খ্যাতির কোনো লোভ নেই।
কপিল বলেন, সংবাদ শিরোনামে আসার জন্য আমরা বিয়ে করিনি। প্রদীপের ভাষায়, এই বিয়ের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো একসঙ্গে থাকা এবং ভালোবাসা বজায় রাখা। মানুষকে বলছি, আমাদের সমালোচনা করবেন না—আমরা আমাদের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট।
বিয়েটি শিল্লাই গ্রামের ট্রান্স-গিরি অঞ্চলে ১২ জুলাই শুরু হয়ে তিন দিনব্যাপী চলে। নাচ, স্থানীয় লোকগীতি এবং গ্রামীণ উৎসবের রঙিন আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
শতাব্দী-প্রাচীন এই প্রথার উদ্দেশ্য হলো পূর্বপুরুষদের জমি খণ্ডিত হওয়া রোধ করা—যা পাহাড়ি কৃষি সম্প্রদায়ের জন্য একটি বড় সমস্যা। এ ধরনের বিবাহে সাধারণত বড় ভাইকেই সন্তানদের আইনি পিতা হিসেবে গণ্য করা হয়।
সূত্র: এনডিটিভি
এমএসএম

3 weeks ago
6









English (US) ·