কোনো আসনে একজন প্রার্থী থাকলে সেখানে ‘না’ ভোটের বিধান রাখাসহ একগুচ্ছ সংশোধনী এনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ চূড়ান্ত করতে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ চূড়ান্ত করতে ভেটিংয়ের জন্য মঙ্গলবার সকালে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় খতিয়ে দেখার পর তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
গত ১২ আগস্ট প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০২৫, পাশাপাশি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫–এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।
ওইদিন বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আরপিওতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইভিএম সংক্রান্ত যাবতীয় বিধি বিলুপ্ত করা হয়েছে। ‘না’ ভোটের বিধান করা হয়েছে।
‘না’ ভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘না’ ভোটের বিধানটা হবে যদি কোথাও একজন প্রার্থী হয়, তাহলে তিনি বিনা ভোটে নির্বাচিত হবেন না। সার্বিকভাবে ‘না’ ভোট নয়। যদি কোনো কনস্টিটিয়েন্সিতে (আসন) মাত্র একজন ক্যান্ডিডেট (প্রার্থী) হন, তাকেও নির্বাচনে যেতে হবে। তার বিপক্ষে ‘না’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সেখানে যদি ‘না’ বিজিত হয়, তাহলে দ্বিতীয় ধাপে আর ভোট হবে না। তখন ব্যক্তি প্রার্থী নির্বাচিত বলে বিবেচিত হবে।
ওইদিন আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ আরও বলেন, আরপিওতে নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত ও বাতিল নিয়ে যে বিধানগুলো ছিল, যেখানে পুরো কনস্টিটিয়েন্সির (আসন) নির্বাচন বাতিল বা ফলাফল বাতিল করার যে সক্ষমতা, সেটাকে সীমিত করা হয়েছিল। সেটা আবার পুনঃস্থাপন করা হয়েছে, অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন অবস্থা বুঝে নির্বাচন স্থগিত করা, এক বা একাধিক বা সমস্ত কনস্টিটিয়েন্সির ফলাফল বাতিল করতে পারবে।
তিনি বলেন, আরপিওতে আরও যে উল্লেখযোগ্য বিধান আনা হয়েছে- সরকার ও ইসির মধ্যে মতবিরোধ হলে প্রাধান্য পাবে ইসির চাহিদা; তফসিল ঘোষণার ৪৫ দিন আগেই প্রশাসন ও পুলিশসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইসির অধীনে যাবে; সরকারি কর্মকর্তারা নির্দেশনা না মানলে গোপনীয় অনুবেদন ও শাস্তির ব্যবস্থা নেবে ইসি।
একই আসনে সমান ভোট পেলে লটারিতে বিজয়ী ঘোষণার বিধান বাতিল করে পুনঃভোটের প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে আলোকসজ্জার ওপর নিষেধাজ্ঞা রেখে ডিজিটাল বিলবোর্ডে আলোর ব্যবহারের সুযোগ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া দলের নির্বাচনী ব্যয় ও আয় ওয়েবসাইটে প্রকাশ, প্রতীক বরাদ্দের আগেই মামলা নিষ্পত্তি, হলফনামায় অসত্য তথ্য দিলে ভোটের পরও ব্যবস্থা, মিথ্যা অভিযোগ দিলে মামলাসহ বেশকিছু প্রস্তাব এতে রয়েছে।
এমওএস/এমকেআর/এমএস