একটা সংগঠন সব শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না : নাছির উদ্দীন

2 weeks ago 14
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য একটি সংগঠন থেকে প্রতিনিধি নেওয়া হয়েছে। যেখানে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সব ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের দেখা করার কথা। তিনি বলেন, একটা মাত্র সংগঠন কখনো সব শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না।  মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আয়োজিত এক মানববন্ধনে সম্পাদক এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি সব সংগঠনকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাতের নিন্দা জানান। নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা অবশ্যই দেখা করতে পারে কিন্তু কোনো প্রেস নোটের মাধ্যমে তা হবে না। আমরা ক্রিয়াশীল ছাত্র-সমাজের ২৮ টি সংগঠনকে আমন্ত্রণ দিয়েছিলাম সভার জন্য। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দাওয়াত দিইনি কারণ তারা তাদের নিজেদের রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন মনে করে না।  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির শিবিরকে ইঙ্গিত করে বলেন, আরেকটি সংগঠনকে দাওয়াত দিইনি বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এই ছাত্র সংগঠনটি অতীতে গোপন আতাতের মাধ্যমে রাজনীতি করেছে। খুনি সংগঠন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর তারা এবার প্রকাশ্যে এসে রাজনীতি করছে। তাই আমরা সব সংগঠনের সঙ্গে তাদের আমন্ত্রণ জানিইনি। এরকম একটি ছাত্র সংগঠনকে দাওয়াত জানানো মানে হলো গোপন রাজনীতিকে প্রাসঙ্গিক করে গড়ে তোলা। তাদের রাজনীতির ধরনের কারণে এই সংগঠনটিকে শিক্ষার্থীরা ঘৃণা করে। গত ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর খুনি ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে মিলেমিশে রাজনীতি করে এখন প্রকাশ্যে এসেছে। ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, দুনিয়া কাঁপানো ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদলের ১০০ এর অধিক নেতাকর্মী খুনি হাসিনার দ্বারা নিহত হয়েছে। তাছাড়া সারা দেশে অন্যকোনো সংগঠনের এত নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে কেউ দেখাতে পারেনি। জাতীয়তাবাদ ছাত্রদলের প্রথম শহীদ ওয়াসিমকে আমরা ভুলে যাইনি। ৫ হাজারের অধিক নেতাকর্মী সে সময় গ্রেপ্তার হয়েছিল। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বিশ্বাস করে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্ব যে আন্দোলন গত ৫ আগস্ট তার প্রাথমিক ফলাফল পেয়েছে। ৫ আগস্টের পূর্বে সব থেকে নির্যাতিত সংগঠন ছিলো ছাত্রদল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়াও জবি ছাত্রদলের পাঠাগারবিষয়ক সম্পাদক আতিক সিয়াম, ফেরদৌস শেষ, এইস এম নাসিম,অনিক কুমার দাস ও ফয়সাল কামাল গুলিবিদ্ধ হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন নেতাকর্মী এখন পর্যন্ত গুম রয়েছে। তাদেরকে এখনো খুনি হাসিনা থেকে ফেরত পাইনি। আমরা স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ইতিবাচক রাজনৈতিক পরিবেশের সূচনা হয়েছে। ২১ শতক উপযোগী হিসেবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে জাতীয়তাবাদ ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারেক রহমান। এ লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর সব চাপিয়ে দিত। এখন শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভবিষ্যতে ছাত্রদলের রাজনীতি পরিচালিত হবে। এ সময় নাছির উদ্দীন বলেন, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা দাবি জানাতে চাই খুনি ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সকল নেতাকর্মীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। মানববন্ধনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, ফ্যাসিস্ট সংগঠন আওয়ামী লীগ দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠিয়ে ও তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছিল। খুনি হাসিনা পুরো দেশকে একটি বৃহৎ কারাগারে পরিণত করেছিলো। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে তাদের রক্ষীবাহিনী দ্বারা সন্ত্রাসের অভায়রণ্য করে রেখেছিল। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দেশে আয়নাঘর বানিয়ে আমাদের ভাই ছাত্রদলের রাসেল, রানা, আল আমিনকে আজও গুম অবস্থায় রেখেছে। প্রতিটি মায়ের আহাজারি তারা তাদের সন্তানকে ফেরত চায়। প্রতিটি ছাত্রদলের সহকর্মী তাদের ফেরত পেতে আহাজারি করছে। আমরা আমাদের গুম হওয়া সহকর্মীকে ফিরে পেতে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সংগ্রামকে ত্বরাণিত করে আন্দোলন চালিয়ে যাব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত।   জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেত, সিনিয়র সহসভাপতি ইব্রাহিম কবির মিঠু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হিমেল, মো. মাহমুদুল হাসান খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আরেফিন, ১নং সহ সভাপতি আজিমুল হাসান চৌধুরী, ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিল্লাত পাটোয়ারী, যুগ্ম সম্পাদক সুমন সর্দার, জাফর আহম্মেদ, প্রচার সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রুমি, দপ্তর সম্পাদক সাখাওয়াতুল ইসলাম খান পরাগসহ শাখা ছাত্রদলের কয়েকশ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। 
Read Entire Article