একটি মাত্র দমন পদ্ধতি ব্যবহার করে কখনই মশা নিধনে সফলতা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। মশা নিধনে সফলতা পেতে অবশ্যই বহুমাত্রিক ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন বলে মত দেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ আয়োজিত ৫ম মাসিক সভায় বৈজ্ঞানিক অধিবেশনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান খানের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) এন্টোমোলোজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার।
মূল প্রবন্ধে ড. মো. গোলাম ছারোয়ার বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান ডেঙ্গুর পরিস্থিতি এবং ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার ঘনত্ব, প্রজনন স্থল এবং মশকের প্রচলিত দমন পদ্ধতি বিশেষ করে শুধু বিষাক্ত কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহার ক্ষতিকারক ও অকার্যকর। এ সময় ডেঙ্গুর ভয়াবহতা রোধে বহুমাত্রিক জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার কথা তুলে ধরেন তিনি।
সভায় পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ব্যবস্থাপনার মধ্যে বিষাক্ত পদার্থের সর্বনিম্ন ব্যবহার এবং জৈবিক উপাদানের সর্বোচ্চ ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। পাশাপাশি মানুষসহ অন্যান্য জীব এবং পরিবেশের ওপর জনস্বাস্থ্যে ব্যবহৃত বিষাক্ত কীটনাশকের বিষক্রিয়া ও এর প্রভাবমুক্ত করার ওপর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
এছাড়াও প্রবন্ধে বেশকিছু পরামর্শ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে-
• ডেঙ্গু নিধনে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা।
• সুপরিকল্পিত নগরায়ন বাস্তবায়ন।
• পরিবেশ দূষণমুক্ত নিশ্চিত করা।
• মশার প্রজননস্থল চিহ্নিত ও ধ্বংস করা।
• অতি দক্ষ ও শক্তিশালী মনিটরিং ও মূল্যায়ন নিশ্চিত করা।
• জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমন্বয় নিশ্চিত করা।
• যুক্তিসংগত ও ন্যূনতম কীটনাশকের ব্যবহার।
• জৈবিক দমন ব্যবস্থাপনার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা।
• আইপি ভি এম এর সঠিক প্রয়োগ।
• রোগীর প্রকৃত ঠিকানা ও ইতিহাস নিশ্চিত করা।
• মশার বিস্তার রোধে ক্র্যাশ প্রোগ্রামের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া।
• সর্বোপরি গবেষণা ও এর ফলাফল ন্যাশনাল ডেঙ্গু প্রিভেনশান অ্যান্ড কন্ট্রোল স্ট্রাটেজি ২০২৪-২০২৩ এর সঙ্গে সমন্বয় করে যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা।
এএএম/ইএ/জিকেএস