একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগে চরের মানুষ

10 hours ago 3

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার পশ্চিম চরঘাসিয়া গ্রামের চান্দার খালের ওপর সেতু নেই। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পাঁচ হাজার মানুষ। বাধ্য হয়ে চরের বাসিন্দাদের খালের পানি সাঁতরে-মাড়িয়ে পারাপার হতে হয়। ভয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

দুর্ভোগ লাঘবে ২০২১ সালে স্থানীয় লোকজন চাঁদা তুলে ওই খালের ওপর পাটাতন দিয়েছিলেন। চলাচলের জন্য চার লাখ টাকা ব্যয়ে তারা অস্থায়ীভাবে পাটাতনটি নির্মাণ করেন। গত এপ্রিলে খালে অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে পশ্চিমপাড়ের অংশ পাটাতন ভেঙে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ বাসিন্দারা।

পশ্চিম চরঘাসিয়া গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের অন্যসব ওয়ার্ডের চেয়ে ২ নম্বর ওয়ার্ডের আয়তন বড়। এখানে ভোটার সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাত হাজার। এই ওয়ার্ডের চান্দার সংযোগ খালের দুই পাড়ের লোকজন বসবাস করেন। এর পশ্চিম অংশে চর ঘাসিয়া, চর ইন্দুরিয়া, চর জালিয়া, নতুন কানিবগার চর ও মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ের বরিশালের হিজড়ার কিছু মানুষ এ পথে যাতায়াত করে। তাদের মেঠোপথ ধরে খাল পার হয়ে চরবংশীর খাসেরহাট ও রায়পুরে আসা-যাওয়া করতে হয়। মাইলের পর মাইল হেঁটে চলতে হয় কাঁচা রাস্তা।

একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগে চরের মানুষ

চরের বাসিন্দা জালাল উদ্দিন খান জাগো নিউজকে বলেন, ‌‘আগে এখানে সাঁকো ছিল। কিছুদিন পর পর সেটি জরাজীর্ণ হয়ে গেলে লোকজনকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হতো। অনেক নারী সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়েছেন। এরপর এলাকার লোকজনের কাছ থেকে চাঁদা তুলে খালের ওপর পাটাতন তৈরি করা হয়। কিন্তু নদীর জোয়ারের পানি এ খাল দিয়ে ঢোকার সময় পাটাতনের একাংশ ধসে পড়ে। এরপর পুরোপুরি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে ভাঙা অংশে গাছ বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

স্থানীয় শামীম গাজী জাগো নিউজকে বলেন, ‘সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় চরের লোকজনকে পণ্য নিয়ে মাইলের পর মাইল কাদাযুক্ত কাঁচা রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হয়। চরের জমিতে ব্যাপকহারে সয়াবিন, ধান ও সবজি আবাদ হয়। তবে কৃষিপণ্য ঘরে তুলতে বা বাজারে নিতে কোনো পরিবহন পাওয়া যায় না। কাঁচা রাস্তা সলিং এবং খালের ওপর সেতু নির্মাণ করলে এই অঞ্চলের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবেন।’

আরেক বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘চরের কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হলে সহজে হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসকের কাছে নেওয়া যায় না। রোগীদের কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয়। একটি সেতু না থাকায় আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।’

পশ্চিম চর ঘাসিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহির আলম। তিনি বলেন, ‘ভেলা দিয়ে খাল পার হওয়ার সময় আমিও পানিতে পড়ে গেছি। ভয়ে বিদ্যালয়ে ছোট ছাত্রছাত্রীরা কম আসছে। অনেকে সাঁতরে এসে পাড়ে জামাকাপড় বদল করে। সবার দাবি, খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হোক। সরকার নজর দিলেই আমরা মুক্তি পাবো।’

এ বিষয়ে রায়পুর উপজেলা প্রকৌশলী সুমন মুন্সি বলেন, বিষয়টি সরেজমিন গিয়ে দেখা হবে। জনদুর্ভোগ লাঘবে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কাজল কায়েস/এসআর/এমএস

Read Entire Article