‘একদম চুপ, কান ফাটাইয়া ফেলমু’, অধ্যক্ষকে জামায়াত কর্মী

3 hours ago 5

‘একদম চুপ। কান ফাটাইয়া ফেলমু। বের হ।’ কুমিল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ নাদিমুল হাসান চৌধুরীকে ঠিক এমন উত্তপ্ত বাক্যে শাসালেন ইফতেখার আলম ভূইয়া নামে এক জামায়াত কর্মী। এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং ওই জামায়াত কর্মীর বিচারের দাবিতে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) কুমিল্লা নগরীর কোটবাড়ি কুমিল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এতে নগরীতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

ভাইরাল সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার দুপুর ১টার দিকে জামায়াত কর্মী ইফতেখার আলম ভূইয়া ও তার ভাই অ্যাডভোকেট কাউছার আলম ভূইয়াসহ ৪ থেকে ৫ জন ব্যক্তি কুমিল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ নাদিমুল হাসান চৌধুরীর কক্ষে যান। ভেতরে বসে থাকা অবস্থায় অধ্যক্ষকে উদ্দেশ করে ইফতেখার আলম বলেন, ‘একদম চুপ। কান ফাটাইয়া ফেলমু। বের হ।’

এ সময় অধ্যক্ষকে বলতে শোনা যায়, ‘আরে মিয়া ধমক দিয়া কথা বলেন কেন।’ পরে অধ্যক্ষের আশপাশের আরও দুইজন আঙুল তুলে শারীরিকভাবে তাকে লাঞ্ছিত করেন। তখন কলেজের কয়েকজন প্রভাষক তাদের চুপ রাখার চেষ্টা করলে তাদের দিকেও তেড়ে আসেন ওই জামায়াত কর্মী। অধ্যক্ষ ও কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী সকলের নিরাপত্তার জন্য পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সদর দক্ষিণ থানায় ফোন দিলে পরে বিষয়টি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

অভিযুক্ত ইফতেখার আলম ভূইয়া জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন কুমিল্লা মহানগরীর সহসভাপতি। তিনি কুমিল্লা রূপসি বাংলা কলেজ সমিতির সভাপতি এবং বুড়িচংয়ের আবিদপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক।

ভুক্তভোগী কুমিল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ নাদিমুল হাসান চৌধুরী বলেন, আমি প্রতিদিনের ন্যায় কলেজে আমার কাজ করছিলাম। হঠাৎ আগের অধ্যক্ষ জামায়াত ইসলামীর কর্মী ইফতেখার সাহেবসহ কয়েকজন আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং আমাকে মারার হুমকি দেন। বিষয়টি আমি থানায় জানিয়েচি। এ ছাড়া কলেজ পর্ষদ আইনি ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে ইফতেখার আলম ভূইয়া বলেন, ‘অধ্যক্ষ নাদিম আওয়ামী লীগের দোসর। আমি কলেজকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত করতে গিয়েছিলাম। এত বছর আওয়ামী লীগ এ কলেজ দখল করে রেখেছিল।’

এ বিষয়ে জানতে কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের আমির কাজী দীন মোহাম্মদের মোবাইলে কল করা হলে মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো. সোহেল বলেন, ‘ইফতেখার আলম ভূইয়া আমাদের কর্মী। ভাইরাল ভিডিওটির বিষয়ে মহানগর জামায়াতের আমিরের দৃষ্টিতে এসেছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সিটি কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে অপ্রীতিকর এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অধ্যক্ষ অভিযোগ দিলে আমরা নিশ্চয়ই যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’

Read Entire Article