একাদশে সোহান আর রিশাদ নেই কোন যুক্তিতে?

3 hours ago 3

দলে পরিবর্তন আসবে কি আসবে না, তা নিয়েই ছিল প্রশ্ন। তবে সচেতন ক্রিকেট অনুরাগীদের ধারণা ছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাওয়া ৮ রানের সংগ্রামী জয়ের পর আর শনিবার রাতে দুবাইতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন আসবে এবং এবার আর চার স্পেশালিস্ট বোলারের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে নামতে চাইবে না টাইগাররা।

তাই আগের ম্যাচে আফগানদের সাথে পার্টটাইম অফস্পিনার হিসেবে বোলিং করা সাইফ হাসান আর শামীম পাটোয়ারীর যে কোনো একজনকে বাইরে রেখে হয় একজন পেসার না হয় একজন স্পিনারকে দলে নিয়ে ৫ জেনুইন বোলারে দল সাজিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ।

শনিবার রাতে দুবাইতে লঙ্কানদের সাথে টসের সময় সাবেক ভারতীয় ব্যাটিং তারকা সঞ্জয় মাঞ্জেরেকরের সাথে তাৎক্ষণিক কথোপকোথনের সময়ই লিটন দাস জানিয়ে দিলেন, আমাদের আজ দুটি পরিবর্তন, রিশাদ নেই আর নুরুল হাসান সোহান নেই।

পরক্ষণে ওয়েবসাইট ঘেঁটে জানা গেল, রিশাদের জায়গায় অফস্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী আর মিডল অর্ডার ব্যাটার নুরুল হাসান সোহানের বদলে বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল। তার মানে তাসকিন, মোস্তাফিজের সাথে থার্ড পেস বোলিং অপশন হিসেবে তানজিম সাকিব নয়, খেলছেন বাঁ-হাতি এক্সপ্রেস বোলার শরিফুল।

দুবাইয়ের মাঠে রাত গড়ানোর সাথে সাথে শিশির পড়ে। বাংলাদেশের মত নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারিতে নয়, বছরের এই সময়েও দুবাইয়ের মাঠে শিশির পড়ার রেকর্ড বেশি। সেই বিবেচনায় বাড়তি পেসার নেয়া। ঠিক আছে। তাই বলে রিশাদকে বাদ দেয়া হলো কেন? এ লেগস্পিনার তো উইকেটটেকিং বোলার। প্রয়োজনীয় সময় ব্রেক থ্রু দিতে পারেন। দিয়েছেনও।

আসুন গত কয়েক মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রিশাদ কি করেছেন , তা দেখে নেয়া যাক। ইতিহাস জানাচ্ছে গত জুলাই মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ যে ২-১ এ সিরিজ জিতেছিল, সেখানেও লেগি রিশাদের ভূমিকা ছিল যথেষ্ঠ।

তিন ম্যাচে রিশাদ ৪ উইকেট নেন (পাল্লেকেল্লেতে প্রথম ম্যাচে ৪ ওভারে ১/২৪, কলম্বোয় সিরিজে ফেরার ম্যাচে ৩.২ ওভারে ৩/১৮, আর শেষ ম্যাচে অফস্পিনার শেখ মেহেদীর ক্যারিয়ার সেরা নৈপুণ্যে, ৪/১১, লঙ্কানরা মাত্র ১৩২ রানে অলআউট হয়ে ৮ উইকেটে হার মানে। সে খেলায় রিশাদ ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে উইকেট পাননি)।

তবে হ্যাঁ, এবারের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ যে শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটে হেরেছে, তাতে রিশাদ বল হাতে কিছুই করতে পারেননি। প্রথম ওভারে ১৮ রান দিয়ে ফেলায় আর বোলিং পাননি এ লেগস্পিনার।

হয়তোবা সে কারণেই রিশাদকে খেলানোকে বাড়তি ঝুঁকি মনে করেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তা মনে করলে চলবে কেন, একজন লেগস্পিনার সব সময়ই গেম চেঞ্জার, তাকে খেলানোয় ঝুঁকি যেমন থাকে, আবার তার হাত ধরে ম্যাচের দৃশ্যপটও যায় পাল্টে। তা জেনেও রিশাদকে বাদ দিয়েছে টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট। বোঝাই যায় ঝুঁকি নেয়ার সাহসটাও কম।

এর বাইরে আরও নেই নুরুল হাসান সোহান। আফগানদের সাথে ৪, ৫ ও ৬ নম্বরে যে তিনজন ব্যাটিং করেছেন সেই তাওহিদ হৃদয় (২০ বলে ২৬), শামীম পাটোয়ারী (১১ বলে ১১) আর জাকের আলী অনিকের (১৩ বলে ১২) চেয়ে বেটার (৬ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১২ অপরাজিত) স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করেছেন সোহান।

শুধু শেষ দিকে একাধিক চার হাঁকানোই নয়, সোহান ফিল্ডিংয়েও দেখিয়েছেন দারুন ক্ষিপ্রতা, চপলতা আর দক্ষতা। কভার পয়েন্টে মাটিতে শরীর ফেরে চকিতে বল ধরে কিপারের গ্লাভসে থ্রো করে আফগান অলরাউন্ডার করিম জানাতকে রান আউট করার পুরো কৃতিত্বও সোহানের।

অথচ তারচেয়ে অকার্যকর পারফর্ম করেও তাওহিদ হৃদয়, শামীম পাটোয়ারী আর জাকের আলী অনিকরা বহাল তবিয়তে দলে। তাওহিদ হৃদয় পুরো এশিয়া কাপে যে স্লথ ব্যাটিং করেছেন, তারপরও তাকে টানা ৪ ম্যাচ খেলানোর যৌক্তিকতা কী?

তার ব্যাখ্যা দেবেন কে? তার চেয়ে বেটার অপশন হতে পারেন সোহান। অথচ তিনি নেই। সেটা কোন যুক্তিতে? এর ব্যাখ্যা কে দেবেন? হেড কোচ, ক্যাপ্টেন না এ মুহূর্তে বিরাট হর্তাকর্তা হয়ে ওঠা চিফ অ্যাসিসটেন্ট কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দীন?

এআরবি/আইএইচএস/

Read Entire Article