এনদ্রিকদের কম বয়সে ইউরোপে যাওয়া ঠিক হচ্ছে না: বিয়েলসা

3 months ago 26

মার্সেলো বিয়েলসাকে বলা হয় কোচদের কোচ। বিশ্বের সব বাঘা বাঘা কোচেরা তার অধীনে ক্লাস করে বর্তমানে নাম কুড়িয়েছে। সেই বিয়েলসাই এবার উরুগুয়ের জাতীয় দলের ডাগআউটে। ব্রাজিলের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে নামার আগে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের তরুণ ফুটবলারদের কম বয়সেই ইউরোপে পাড়ি জমানোর সমালোচনা করলেন বিয়েলসা।

এনদ্রিকের দক্ষতা আর্জেন্টাইন এই কোচের নজর এড়ায়নি। ফুটবলের নাড়ীনক্ষত্র মোটামুটি সব জানা বিয়েলসার। দক্ষিণ আমেরিকার প্রত্যেকটা লিগের প্রতিটি দলের অতীত ও বর্তমান সব খুঁটে খুঁটে জানা আছে তার। যে কারণেই তাকে বলা হয় কোচদের কোচ।

সংবাদ সম্মেলনে তার ১৯৯২ সালের ক্লাব নিউওয়েল ওল্ড বয়েজের সাও পাওলোর বিপক্ষে কোপা লিবারতোদেরেসের ফাইনালে টাইব্রেকারে হারার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে সাংবাদিকদের থামিয়ে বিয়েলসা তারই প্রেক্ষিতে বর্তমান ফুটবলকে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘আপনি কি জানেন, তখন সাও পাওলো কি ফরমেশনে খেলেছিল? বড় মাপের কোচ ছিল তখন এবং সকল ব্রাজিলিয়ান ফুটবলাররা তখন ব্রাজিলের ঘরোয়া লিগ খেলতো। দক্ষিণ আমেরিকার ভঙ্গুর ফুটবল অবকাঠামোর দিকে তাকান। রাই, আন্তোনিও কার্লোস, রোনালদো, কাফু, পিন্তাদো, মুলার- সবাই ‘ইউরোপিয়ান ক্লাব’ ফুটবলার হিসেবে পরিচিত।

কিন্তু ইউরোপে যাওয়ার আগে তারা দুইটা কোপা লিবারতোদরেস ফাইনাল খেলেছে। তাতে ফুটবলের কি হয়েছে? গরীবরা খুব কমই সুখের দেখা পায়, কারণ তাদের হাতে টাকা থাকে না যে সুখ কিনবে। তখনকার পর থেকেই ফুটবলটা সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে গেল।’

১৭ বছর বয়সেই রিয়াল মাদ্রিদের মতো দলে নাম লিখিয়েছেন ব্রাজিলের এনদ্রিক। সম্প্রতি পালমেইরাসের আরেক উইঙ্গার এস্তেভাও নাম লিখেছেন চেলসিতে। বিয়েলসা তাদের সম্পর্কে বলেন, ‘একমাত্র এই ফুটবলের ভেতর গরীবরা কিছু পেতো আগে; কিন্তু সেটি এখন আর নেই। কারণ ১৭ বছর বয়সী এনড্রিক, পালমেইরাস উইঙ্গার এস্তেভাও …। কি লজ্জা! আমি আজকে এসব নিয়ে কিছু বললে আমার সমালোচনাই করবে সবাই।’

বর্তমান ফুটবল অনেকটা প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এটাকেও ফুটবলের সেই ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়া দেখছেন বিয়েলসা। ‘মনে হচ্ছে প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছাচ্ছি যেটা আর পরিবর্তন করা যাবে না। আমার কাছে মনে হয়, এটা ফুটবলকে ক্ষতি করছে। এইসব ক্ষেত্রে ম্যাচগুলোর ফলাফল অনেকাংশেই নিশ্চিত করে বলে দেওয়া যাচ্ছে, যা খেলার মান হারাচ্ছে। আমি নিশ্চিত যে, ফুটবল মানোন্নয়নের বদলে এটি আরো নিচের দিকে যাচ্ছে।’

‘যত মানুষ ফুটবল দেখছে দিনদিন ততই এর মান নিচের দিকে নামছে ও আকর্ষণ কমে যাচ্ছে। এটা আর বিশ্বের এক নম্বর খেলার অর্থ বহন করে না। যারা খেলা দেখে তাদেরকে আর বিনোদন দেয় না। এটা ব্যবসাকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে, শুধু লক্ষ্যই থাকে কতজন ফুটবল দেখলো সেটি নিয়ে। ফুটবলটা ব্যবসাকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে; কিন্তু সময় যত যাচ্ছে যেসব ফুটবলারের খেলা বাস্তবিক অর্থেই দেখা উচিত তাদের খেলাও কম উপভোগ্য হয়ে যাচ্ছে এইসব ভিউয়ারশিপের জন্য। ফুটবলটা পাঁচ মিনিটের খেলা নয়, এটা তার থেকেও অনেক বেশি সময়ের খেলা। এটা সংস্কৃতির অংশ যা নিজেদের অস্তিত্বকে জানান দিবে।’

আরআর/আইএইচএস/

Read Entire Article