জয়পুরহাটে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আলোচনা সভা ও ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দেন আওয়ামী লীগ নেতা কাজী রাব্বীউল হাসান মোনেম। অনুষ্ঠানে এনসিপিকে সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য দেওয়ায় আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
গত সোমবার (২৪ মার্চ) শহরের স্বপ্নছায়া কমিউনিটি সেন্টারে ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনীতিবিদ, শহীদ ও আহত পরিবার বর্গ, ছাত্র-শ্রমিক, পেশাজীবী, অ্যাক্টিভিস্ট, ওলামায়ে কেরাম, বিশিষ্ট নাগরিকদের সম্মানে এই আলোচনাসভা, ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
কাজী রাব্বীউল হাসান মোনেম জয়পুরহাট-২ আসনের (ক্ষেতলাল, কালাই ও আক্কেলপুর) জাসদের সংসদ সদস্য ছিলেন। এরপর জেলা জাতীয়পার্টির যুগ্ম আহ্বায়কের পদে ছিলেন। পরে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি কালাই উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নম্বর সদস্য। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে কোনো পদে তার নাম নেই বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে আওয়ামী লীগের ওই নেতার উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির আহ্বায়ক হাসিবুল হক সানজিদ একটি পোস্ট দিয়েছেন। ওই পোস্টে তিনি দুটি ছবি দিয়েছেন। একটি ছবিতে সাবেক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রকেটসহ আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে রাব্বীউল হাসান মোনেম রয়েছে। অন্য ছবিটি সোমবারে শহরের স্বপ্নছায়া কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার ও দোয়া মাহফিলে রাব্বীউল হাসান বক্তব্য দিচ্ছেন।
দুটি ছবিযুক্ত ফেসবুক পোস্টে হাসিবুল হক সানজিদ লিখেছেন, ‘জয়পুরহাটে জাতীয় নাগরিক পার্টির স্বঘোষিত সংগঠকদের দাওয়াতে জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও কালাই উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নম্বর সদস্য, জাসদের সাবেক সদস্য রাব্বিউল হাসান মোনেম। জাতীয় নাগরিক পার্টি জয়পুরহাট জেলা শাখার ইফতার মাহফিলে নাগরিক পার্টিকে সমর্থন দিয়ে বক্তব্য দেন।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘এস এম সাইফ মোস্তাফিজ ভাই আপনাকে বারবার বলার পরেও কোনো পদক্ষেপ নিলেন না। একটি কুচক্রী মহল যে এই নাগরিক পার্টির নাম খারাপ করে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতেছে এটা কি আপনাদের চোখে পড়বে না?। আশা করি সদুত্তর পাব। জয়পুরহাটের বুকে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হতে দিব না ইনশাল্লাহ ‘
জান-ই আলম অপু নামে একজন লিখেছেন, ‘এবার তো সহ্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছ।’ জুয়েল মন্ডল নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘আওয়ামী দোসরদের শক্ত হাতে দমন করা জরুরি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির আহ্বায়ক হাসিবুল হক সানজিদ স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, রাব্বিউল হাসান মোনেম আওয়ামী লীগের নেতা। জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার মাহফিলে তাকে দাওয়াত করে আনা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ নেতাদের পুনর্বাসন করতে ছাত্র-জনতা রক্ত দেননি। এটা সাংঘর্ষিক।
এ বিষয়ে অ্যাড. কাজী রাব্বিউল হাসান মোনেম বুধবার (২৬ মার্চ) রাতে কালবেলাকে বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ইফতার দাওয়াতে গিয়েছিলাম। শুভেচ্ছা জানিয়েছে নতুন দলকে। এসময় তিনি নতুন দলে যোগ দেওয়ার কথা নাকচ করে দেন। এছাড়াও তিনি বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির কোনো পদে নেই বলে দাবি করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জেলা সংগঠক ওমর আলী বাবু বলেন, বিশিষ্ট নাগরিক হিসেবে কাজী রাব্বিউল হাসান মোনেমকে দাওয়াত করা হয়েছিল। তিনি আমাদের ইফতার মাহফিলে এসেছিলেন। বক্তব্যও দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের কমিটিতে কাজী রাব্বিউল হাসান মোনেমের নাম নেই। এটা নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে।