ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি বেশ সংকটের মধ্য দিয়েই যাচ্ছে। অফ ফর্মে থাকা ম্যানচেস্টার সিটি শেষ ১২ ম্যাচের মধ্যে জয় পেয়েছে মাত্র ১টিতে। তাই বক্সিং ডে’তে গার্দিওলার শিষ্যদের লক্ষ্য ছিল জয়ে ফেরা, তবে সেই লক্ষ্য আর পূরণ হলো না । পুঁচকে এভারটনের সঙ্গেও ১-১ গোলে ড্র করতে হলো হলান্ড-সিলভাদের।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বক্সিং ডে’তে ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে আর্লিং হলান্ডের পেনাল্টি মিস এবং জর্ডান পিকফোর্ডের অসাধারণ সেভ সিটির জয়ের আশা শেষ করে দেয়। টানা খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ছন্দহীন অবস্থায় পয়েন্ট তালিকার ষষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল ম্যানচেস্টার সিটি। তৃতীয় মিনিটেই জোসকো গার্দিওলের হেড পোস্টে লেগে ফেরত আসে। এরপর ১৪ মিনিটে জেরেমি ডোকুর পাস থেকে বার্নার্ডো সিলভা একটি ডিফ্লেকশনের মাধ্যমে বল জালে পাঠিয়ে সিটিকে এগিয়ে দেন।
তবে সিটির দুর্বল ডিফেন্সের সুযোগ নিয়ে ৩৬ মিনিটে এভারটনের ইলিমান এনডিয়ায়ে দুর্দান্ত এক ফিনিশিং দিয়ে সমতা ফেরান। আবদুলায়ে ডুকুরের ক্রস থেকে বক্সের মধ্যে বল পেয়ে এনডিয়ায়ে অসাধারণ এক শটে সিটির গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন।
দ্বিতীয়ার্ধে সিটি গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। ৫২ মিনিটে ভিটালি মিকোলেঙ্কোর ফাউলের কারণে পেনাল্টি পায় সিটি। তবে এভারটনের গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড দুর্দান্ত সেভ করে হলান্ডের পেনাল্টি রুখে দেন। পিকফোর্ডের এটি প্রিমিয়ার লিগ ক্যারিয়ারের সপ্তম পেনাল্টি সেভ।
এরপর সিটি আরও কিছু সুযোগ তৈরি করলেও গোল পায়নি। সাবিনহোর শট পিকফোর্ড সেভ করেন এবং মাতেও কোভাচিচের শট সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। কেভিন ডি ব্রুইনা এবং ইলকায় গুনদোয়ানকে বদলি হিসেবে নামানো হলেও সিটির পারফরম্যান্সে উন্নতি আসেনি।
সর্বশেষ ১৩ ম্যাচে মাত্র একটি জয় নিয়ে সিটির অবস্থা এখন অত্যন্ত শোচনীয়। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ চার থেকে ৩ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকা সিটি শীর্ষস্থানীয় লিভারপুলের থেকে ১১ পয়েন্ট পিছিয়ে আছে। কোচ পেপ গার্দিওলার মতে, ‘টপ ফোর নিশ্চিত করাও এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
অন্যদিকে, এভারটন এই ড্রয়ের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার করেছে। ১৭ ম্যাচে মাত্র তিনটি জয় পেলেও সাম্প্রতিক সময়ে তাদের পারফরম্যান্স উন্নত হয়েছে। তারা শেষ চার ম্যাচে অপরাজিত থেকে অবনমন অঞ্চলের থেকে ৫ পয়েন্ট এগিয়ে আছে।
শেষ মুহূর্তে ওরেল মাঙ্গালার শট ডিফ্লেক্ট হয়ে পোস্টের বাইরে চলে গেলে এভারটনের জয় হাতছাড়া হয়। তবে এভারটনের কোচ শন ডাইচ এই ড্রকে ‘একটি ইতিবাচক ফলাফল’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ম্যানচেস্টার সিটির সাম্প্রতিক ফর্ম তাদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। অন্যদিকে, এভারটনের জন্য এটি ছিল মানসিক দৃঢ়তার প্রমাণ। ম্যাচ শেষে সিটি সমর্থকদের হতাশার মাঝে এভারটন সমর্থকদের উল্লাসই প্রমাণ করে দুটি দলের ভিন্ন অবস্থান।