আরব বিশ্বের মোট আয়তনের মাত্র দশমিক ১৭ শতাংশ এবং মধ্যপ্রাচ্যের মাত্র দশমিক ৩১ শতাংশ জায়গাজুড়ে অবস্থান ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের। অথচ গত সাত দশক ধরে একাই গোটা অঞ্চলকে নাকানিচুবানি খাইয়ে যাচ্ছে দখলদার এই রাষ্ট্রটি।
এর মধ্যেই গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক পরাশক্তি ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে ইহুদি বাহিনী। আরব দেশগুলোর বুকের ওপর পা রেখে দুই হাজার কিলোমিটার পারি দিয়ে ইরানি ভূখণ্ডে আক্রমণ করে জানান দিয়েছে নিজের শক্তিমত্তা। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি হামলা থেকে রক্ষা পেতে গাজার যোদ্ধাদের রণকৌশল নকল করছে তেহরান।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি হামলা থেকে সুরক্ষা পেতে রাজধানী তেহরানের মেট্রো নেটওয়ার্কে প্রতিরক্ষামূলক সুড়ঙ্গ নির্মাণ করছে ইরান। তেহরানের সিটি কাউন্সিল ট্রান্সপোর্ট কমিটির প্রধান জাফর তাশাকোরির বরাতে জানা যায়, প্রথমবারের মতো রাজধানীতে প্রতিরক্ষামূলক এ ধরনের সুড়ঙ্গ নির্মাণ করা হচ্ছে।
ইরানি এ কর্মকর্তা জানান, সুড়ঙ্গটি দুটি মেট্রো স্টেশনের মধ্যে স্থাপন করা হবে এবং সরাসরি হাসপাতালের সঙ্গে সংযোগ থাকবে। এমনকি প্রতিরক্ষামূলক সুড়ঙ্গের আওতায় শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান সংযুক্ত থাকবে বলেও জানান জাফর তাশাকোরি। জানা যায়, শহরের কেন্দ্রের কাছে নির্মিতব্য সুড়ঙ্গটি তেহরানের মেট্রোর একটি স্টেশনকে ইমাম খোমেনি হাসপাতালের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
ইরানের নির্মিতব্য এ সুড়ঙ্গে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কী ধরনের সুবিধা থাকবে তা বিস্তারিত জানানো হয়নি। অক্টোবরে ইরানের রাজধানী ও অন্যান্য শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয় তেহরান সরকার। সে সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাগরিকদের জন্য কোনো ধরনের সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা না থাকার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে সাধারণ ইরানিরা।
শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রটির নাগরিকরা ইসরায়েলি হামলা সংক্রান্ত তথ্যের স্বল্পতা এবং রাজধানীতে বিমান হামলার কোনো সাইরেন এবং আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় তীব্র হতাশা প্রকাশ করে। মনে করা হচ্ছে, ইরানের নির্মিতব্য সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্কটি ইসরায়েলি হামলা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতেই প্রস্তুত করা হচ্ছে। ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন বলছে, আগামী ২০ নভেম্বর আইআরজিসির অফিসার্স একাডেমিতে প্রতিরক্ষা সুড়ঙ্গ নামে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।