অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আলোচিত শিল্প গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপকে ফলো করার জন্য অনেকে অপেক্ষা করছে। আমরা বিষয়গুলো অবগত।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বিভাগের সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের দেওয়া লিগ্যাল নোটিশের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সেটা বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জবাব দেওয়া হবে। সে (এস আলম) তো বলবে তাকে হেরেজমেন্ট করা হয়েছে, নানান কথা বলবে। আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ সবার রয়েছে। এটাকে শুধু কাউন্টার জবাব দেওয়া না, এখানে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়ার কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আইনগত দিক রয়েছে। সে একটি লিগ্যাল নোটিশও দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জবাব দেবে। এস আলমকে ফলো করার জন্য আরও অনেকে অপেক্ষা করছে। আমরা বিষয়গুলো অবগত।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সেতো এখন দেশের বাইরে। দেশে থাকলে না হয় একটা সুবিধা হতো। আমরা চেষ্টা করছি, আইনগত ও কূটনৈতিকভাবে সেদেশের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে তার বিষয়ে।
তিনি বলেন, ‘সরকার কারও ব্যবসায়িক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেনি। কেবল ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হচ্ছে। তবে যাচাই–বাছাই শেষে তা আবার খুলে দেওয়াও হচ্ছে।’
দুর্নীতি ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা না থাকলে বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশ অনেক ওপরে চলে যেত মন্তব্য করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আশাকরি আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাবো। এ জন্য জবাবদিহিতার মানসিকতা রাখতে হবে। প্রকল্পে বাড়তি ব্যয় রাখার চেষ্টা করে সেখান থেকে দুর্নীতি করার পরিকল্পনা রাখা যাবে না। দেশের সব সরকারি দপ্তরকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে গুরুত্ব দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক সমঝোতা কঠিন, চাঁদাবাজির সমঝোতা সহজ। কারওয়ান বাজারে দেখেন। চাঁদাবাজি প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমরা বাজার দর সহনীয় ও মানুষের হাতের নাগালে রাখার চেষ্টা করে অনেকটুকু নিয়ন্ত্রণে এনেছি। আমরা প্রায়োরিটি দিচ্ছি ব্যবসা-বাণিজ্য, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখা। নাগরিকদের সেলফ ডিসিপ্লিন থাকতে হবে। সব নিত্যপণ্যে কর প্রায় শূন্য করে দেওয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের কাছে একটি বিরোধ নিষ্পত্তির নোটিশ পাঠিয়েছেন আলোচিত শিল্প গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ওরফে এস আলম। এস আলমের পক্ষে সালিশি নোটিশে বলা হয়েছে, দু’পক্ষ ছয় মাসের মধ্যে সমাধান না করতে পারলে তারা আন্তর্জাতিক সালিশি কার্যক্রম শুরু করবেন।
এসময় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, কাস্টমস কমিশনার মো. জাকির হোসেনসহ চট্টগ্রামের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এমডিআইএইচ/এমএএইচ/