এস কে সুরের গোপন লকার খুলতে বাংলাদেশ ব্যাংকে দুদকের টিম

21 hours ago 9

সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এস কে সুর চৌধুরী) গোপন লকার খুলতে বাংলাদেশ ব্যাংকে পৌঁছেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে উপস্থিত রয়েছেন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আসে।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এস কে সুরের থাকা গোপন লকার খোলার বিষয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুদক টিমের বৈঠক চলছে। এরইমধ্যে একজন স্বর্ণকারকেও ডাকা হয়েছে। বৈঠক শেষে লকার খোলার পরিকল্পনা রয়েছে টিমের। তার আগে আদালতের পারমিশনসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে দুর্নীতি দমন কমিশন।

গত ১৯ জানুয়ারি এক অভিযানে রাজধানীর ধানমন্ডিতে এস কে সুরের বাসা থেকে ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা জব্দের সময় তার নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে লকার থাকার তথ্য পায় দুদক। পরে জানা যায় সেটি ভল্ট নয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল্যবান সামগ্রী রাখার লকার বা সেফ ডিপোজিট।

পরে দুদক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো চিঠিতে লকারে থাকা সামগ্রী স্থানান্তর ও হস্তান্তর না করার অনুরোধ জানানো হয়। গত ২১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা শাখা থেকে দুদককে ফিরতি চিঠি দিয়ে লকারের সামগ্রী স্থানান্তর স্থগিত করার তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারে কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত মূল্যবান সামগ্রী তাদের নিজ নামে প্যাকেট অথবা কৌটায় নিজ দায়িত্বে সিলগালাযুক্ত অবস্থায় জমার তারিখ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত রাখা হয়। গত ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক আরেক চিঠিতে জানায়, এস কে সুর তিনটি লকার নম্বরে মূল্যবান সামগ্রী রেখেছেন। যার মধ্যে গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বরের এসডি-৪৪/৬১ এবং ২০১৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির এসডি-৪৮/১২ নম্বরের নমিনি করেছেন স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরীকে।

আর ২০১৭ সালের ১২ জুলাইয়ের এসডি-৪৭/৩৫ নম্বরে রাখা সামগ্রীর নমিনি করেছেন তার মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীকে। সামগ্রীগুলোর ধরন সম্পর্কে চিঠিতে বলা হয়, সেগুলো কাপড়ে মোড়ানো গালাযুক্ত কৌটা (প্যাকেট)। তিনটি লকারে আদতে কী রয়েছে তা বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়নি। তবে লকারে রাখা প্যাকেট ও কৌটা সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা শাখা জানলেও, তার (লকার) ভেতরে সামগ্রীর বিষয়ে জানে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠির পর দুদক সেটি খুলে দেখার অনুমতি পায়।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সূত্র জানায়, লকার খুলতে আদালতের অনুমতির প্রয়োজন হয়। এজন্য ২২ জানুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক নাজমুল হুসাইন স্বাক্ষরিত আবেদন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজের কাছে জমা দেওয়া হয়। পরদিন আদালত থেকে লকার খোলার অনুমতি পায় দুদক।

দুদকের মামলায় গ্রেফতার হওয়া ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হক আদালতে ১৬৪ ধারায় বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতি-সংক্রান্ত কাজ করে দেওয়ার বিনিময়ে এস কে সুর প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের মাসোহারা পেতেন। কখনও দেওয়া হতো বিপুল অঙ্কের টাকা ছাড়াও মূল্যবান সামগ্রী। আর্থিক খাত থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারকারী পি কে হালদারের ক্ষমতার উৎসে ছিলেন এস কে সুর।

ইএআর/এসআইটি/এমএস

Read Entire Article