এসএসসিতে কমছে পরীক্ষার্থী, নেপথ্যে কী?

4 hours ago 6

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ১০ এপ্রিল। এ বছর পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করেছেন ১৯ লাখ ২৮ হাজার ২৮১ শিক্ষার্থী। গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন। সে হিসাবে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৯৫ হাজার ৯১১ জন।

রোববার (১৬ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল (সি আর) আবরার এ তথ্য তুলে ধরেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা জানান, ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ১ হাজার ৫৩৮ ও ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন। ৯টি বোর্ডে পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ২ হাজার ২৯১টি। ১৮ হাজার ৮৪টি স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

আরও পড়ুন

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৩ জন, ছাত্রী ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮৩৩ জন। পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ৭২৫টি। পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ৯ হাজার ৬৩টি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৮ হাজার ৩৮৫ জন এবং ছাত্রী ৩৪ হাজার ৯২৮ জন বলেও উল্লেখ করেন শিক্ষা উপদেষ্টা।

তবে এতো সংখ্যক পরীক্ষার্থী কেন কমেছে, তা নিয়ে কোনো কথা বলেননি শিক্ষা উপদেষ্টা। সভায় উপস্থিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরও বিষয়টি নিয়ে কিছু বলেননি।

বিষয়টি নিয়ে জানতে সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সঙ্গে রাতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিক্ষার্থী কমুক, সেটা তো প্রত্যাশিত নয়। স্কুলে মাধ্যমিক ও মাদরাসায় দাখিল পর্যায়ে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার বেড়েছে কি না, সেটা যাচাই করতে হবে। যদি একেবারে প্রথম শ্রেণি থেকে শিক্ষার্থী কমে, তাহলে তো সেটা ভিন্ন বিষয়। শিক্ষার্থী কেন কমছে; সেটা যদি শিক্ষাব্যবস্থার কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে হয়; তাহলে সেটা নিয়ে আমরা কাজ করবো।’

প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী ঝরেপড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে গণস্বাক্ষরতা অভিযান। বেসরকারি এ উন্নয়ন সংস্থার প্রধান নির্বাহী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থী ঝরেপড়া বন্ধ হয়নি। উপবৃত্তি চালু করায় একসময় শিক্ষার্থী বেড়েছিল। কিন্তু উপবৃত্তির পরিমাণটা এখন এমন যে, তা দিয়ে আর অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করা যাচ্ছে না। প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ সমস্যাটা বেশি।’

আরও পড়ুন

তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) প্রতিবেদন দেখলে শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার আরও কিছু কারণ আমরা দেখতে পাবো। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- প্রাথমিক বিদ্যালয় বা ইবতেদায়ি তথা আলিয়া ধারার মাদরাসায় শিক্ষার্থী কম ভর্তি হচ্ছে। অনেকে হাফেজি পড়ছে, কওমি ঘরানার মাদরাসায় ভর্তি হচ্ছে। ফলে তারা সাধারণ ধারার পড়ালেখায় থাকছে না। এর প্রভাব এসএসসি ও এইচএসসিতে পড়ছে। এসব পাবলিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী কমে যাচ্ছে।’

এএএইচ/এমকেআর/জেআইএম

Read Entire Article