এসি বিস্ফোরণ : ঘরে বসেই সচেতন থাকবেন যেভাবে

2 hours ago 2

বর্তমানে তীব্র গরম থেকে বাঁচতে এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র) ব্যবহার এখন অনেকটাই সাধারণ। কিন্তু নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এক ভয়াবহ বিপদ হয়ে উঠছে এই এসি – বিস্ফোরণ! শুধু এসি নষ্ট হওয়াই নয়, এতে আগুন লেগে প্রাণহানিও ঘটতে পারে।

চলুন দেখে নিই—কেন এই দুর্ঘটনা ঘটে এবং কীভাবে আপনি নিজেই সতর্ক হয়ে পরিবারকে নিরাপদ রাখতে পারেন।

এসি বিস্ফোরণের মূল কারণ

১. ভুল বৈদ্যুতিক সংযোগ – কমমানের পাওয়ার কেবল বা সার্কিট ব্রেকার ব্যবহারে শর্টসার্কিট হতে পারে।

২. কনডেনসারে ময়লা জমা – এতে তাপমাত্রা ও চাপ বাড়ে, কম্প্রেসার ব্লাস্ট করতে পারে।

৩. রেফ্রিজারেন্ট (গ্যাস) অতিরিক্ত বা কম থাকলে – এসির ভেতরে অস্বাভাবিক চাপ তৈরি হয়।

৪. ভ্যাকুয়াম ঠিকভাবে না করা – নতুন গ্যাস দেয়ার সময় ভেতরে বাতাস বা আর্দ্রতা রয়ে গেলে বিপদ।

৫. পাইপ ব্লক হলে – গ্যাস আটকে গিয়ে চাপ তৈরি হয়।

৬. সঠিক স্পেস না রাখা – আউটডোর ইউনিটের চারপাশে গরম হাওয়া আটকে গিয়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।

৭. কমমানের বা নকল এসি ব্যবহার – সেফটি স্ট্যান্ডার্ড না থাকায় ঝুঁকি বাড়ে।

দুর্ঘটনা এড়াতে করণীয়

রক্ষণাবেক্ষণ

- এসি প্রতি ৩-৬ মাসে সার্ভিসিং করান।

- কনডেনসার ইউনিট পরিষ্কার করুন নিয়মিত।

- পাইপলাইন ব্লকেজ আছে কি না তা পরীক্ষা করুন।

- দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে চালানোর আগে চেকআপ করান অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান দিয়ে।

ইলেকট্রিক সেফটি

- সঠিক রেটিংয়ের সার্কিট ব্রেকার ও ক্যাবল ব্যবহার করুন।

- নিম্নমানের পাওয়ার কেবল ব্যবহার করলে তাপ সৃষ্টি হয়ে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।

রেফ্রিজারেন্ট সংক্রান্ত

- গ্যাস বেশি বা কম নয়, যথাযথ মাত্রায় আছে তা নিশ্চিত করুন।

- ভ্যাকুয়াম সঠিকভাবে করতে হবে গ্যাস চার্জ দেয়ার আগে।

- বিশ্বস্ত কোম্পানির টেকনিশিয়ান ছাড়া গ্যাস চার্জ না করান।

ইনস্টলেশন

- ১ টন এসির জন্য ১৫০ স্কয়ার ফুট জায়গা রাখুন।

- আউটডোর ইউনিট এমন স্থানে বসান যেখানে গরম হাওয়া বের হতে পারে সহজে।

- একাধিক এসি পাশাপাশি না বসানো ভালো।

নকল পণ্য ব্যবহার নয়

- বাজারে থাকা অনেক নকল এসি, কম্প্রেসার ও গ্যাস বিস্ফোরণের বড় কারণ।

- ভালো ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট কিনুন, যেন সার্ভিস ও সেফটি দুটোই ঠিক থাকে।

মনে রাখবেন, এসি চালু অবস্থায় গন্ধ বা শব্দ অস্বাভাবিক লাগলে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করুন এবং টেকনিশিয়ান ডাকুন। গরম জলে ধোঁয়া ওঠা, পেছনের ইউনিটে অতিরিক্ত শব্দ বা কাঁপুনি—এসব বিপদের ইঙ্গিত হতে পারে।

ছোট কিছু টিপস

- গরম খাবার খাওয়ার সময় বা রান্নার ধোঁয়া এলে এসি বন্ধ রাখুন

- নিয়মিত বাতাস চলাচলের জায়গা পরিষ্কার করুন

- দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে হঠাৎ চালু না করে পেশাদার দিয়ে পরীক্ষা করান

এসি বিস্ফোরণ এড়ানো কঠিন কিছু নয়, শুধু সচেতনতা, মানসম্পন্ন যন্ত্রাংশ, এবং নিয়মিত যত্ন—এই তিনটি মেনে চললেই আপনি এবং আপনার পরিবার থাকতে পারবেন নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত।

চাইলে এই গাইডের ওপর ভিত্তি করে একটি চেকলিস্ট পোস্টার বা ইমেজ তৈরি করে দিতে পারি, যা আপনি অফিস/বাড়িতে টাঙিয়ে রাখতে পারবেন বা অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন। জানাতে পারেন।

Read Entire Article