ওয়াই-ফাইয়ের রেডিয়েশন থেকেও হতে পারে ভয়াবহ রোগ!

6 hours ago 2

আজকের আধুনিক সময়ে ইন্টারনেট ছাড়া একদিনও কল্পনা করা যায় না। ঘরে-বাইরে, অফিসে কিংবা ক্যাফেতে- সবখানেই আমরা ওয়াই-ফাইয়ের সঙ্গে যুক্ত। ফোন, কম্পিউটার, ব্লুটুথ স্পিকার- অগণিত ডিভাইস সারাক্ষণ ভরসা করছে এই অদৃশ্য নেটওয়ার্কের ওপর। কিন্তু প্রশ্ন জাগে, এই নেটওয়ার্কের রেডিয়েশন কি শরীরের জন্য ক্ষতিকর?

বিজ্ঞানীরা বহু বছর ধরেই এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন। মেডিকেল কলেজ অব উইসকনসিনের রেডিয়েশন অনকোলজির অধ্যাপক জন মোল্ডার জানান, ২০১৩ সালে তিনি সহকর্মীদের নিয়ে গবেষণার এক রিভিউ করেছিলেন। তাতে দেখা যায়, ওয়াই-ফাই রেডিয়েশন শরীরে যে প্রভাব ফেলতে পারে, তা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

ওয়াই-ফাই রাউটার কিংবা মোবাইল ফোন আসলে রেডিও ওয়েভ ব্যবহার করে তথ্য আদান-প্রদান করে। ১৯৫০-এর দশক থেকেই মানুষের শরীরে রেডিও ওয়েভের প্রভাব নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। তখন নৌবাহিনীর জাহাজে ব্যবহৃত শক্তিশালী রাডারের কারণে সার্ভিসম্যানদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল।

গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চমাত্রার বৈদ্যুতিক চুম্বকীয় রেডিয়েশন টিউমার বা ক্যানসার তৈরি করতে পারে। তবে ওয়াই-ফাই বা মোবাইল ফোনে যে নিম্ন ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহৃত হয়, তার ক্ষতিকর প্রভাব তুলনামূলক কম। বেশিভাগ ক্ষেত্রে তা ত্বকের সামান্য সমস্যা ছাড়িয়ে বড় কোনো ঝুঁকি তৈরি করে না।

পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক কেনেথ ফস্টার বলেন, ওয়াই-ফাই রাউটার আসলে  শূন্য দশমিক ১ শতাংশ সময় তথ্য পাঠায়। বাকি সময় কেবল অপেক্ষা করে। তাই রাউটার থেকে যত দূরে থাকবেন, শরীরে তত কম রেডিয়েশন পড়বে।

তবে সবাই এতটা আশ্বস্ত নন। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জোয়েল মোস্কোভিটজ সতর্ক করে বলেন, প্রাণী গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘমেয়াদি নিম্নস্তরের রেডিয়েশনও স্নায়ুবিক সমস্যা, প্রজনন ব্যাধিসহ ক্যানসারের ঝুঁকিও তৈরি করতে পারে।

এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা সংস্থা (IARC) মোবাইল ফোনকে ‘সম্ভাব্য ক্যানসার সৃষ্টিকারী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। যদিও এখনো যথেষ্ট প্রমাণ নেই যে, ওয়াই-ফাই সরাসরি ক্যানসার ঘটায়।

তবে শিশুদের জন্য বিষয়টি ভিন্ন হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, তাদের শরীর ক্রমবর্ধমান এবং এক্সপোজারও দীর্ঘমেয়াদে বাড়ছে। তাই সাবধানতা অবলম্বন করাই শ্রেয়। যেমন : ডিভাইস শরীর থেকে দূরে রাখা, ব্যবহার না করলে ওয়াই-ফাই বন্ধ রাখা।

সূত্র : টাইম ম্যাগাজিন

Read Entire Article