ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে ভালো কিছুর প্রত্যাশা অলিম্পিয়ান সাগরের

1 month ago 10

দুই আসর বিরতি দিয়ে আবার ওয়ার্ল্ড আরচারি ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে স্পেনের মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত আসরে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছিলেন ৮ জন আরচার। ২০২১ সালে পোল্যান্ডে ও ২০২৩ সালে আয়ারল্যান্ডে খেলা হয়নি বাংলাদেশের কোনো আরচারের। যুব আরচারির সবচেয়ে বড় আসরে আবার দেখা যাবে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। আগামী ১৪ থেকে ২৭ আগস্ট কানাডার উইনিপেগে বসবে ইয়ুথ ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের ১৯তম আসর।

বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশন এই আসরে ৯ জন খেলোয়াড় পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। দুই বিভাগে অংশ নেবেন এই ৯ আরচার। অনূর্ধ্ব-২১ বিভাগে আছেন ৫ জন এবং অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগে আছেন ৪ জন। প্রতিযোগিতায় ২৪ জন আরচার পাঠানোর সুযোগ থাকলেও ব্যয় সামর্থ্যের মধ্যে রাখতে পূর্ণাঙ্গ টিম পাঠানোর পথে হাঁটে না ফেডারেশন।

২০১৯ সালে হাকিম আহমেদ রুবেল, ইতি খাতুন, সাকিব মোল্লা, তামিমুল ইসলাম, দিয়া সিদ্দিকী, প্রদিপ্ত চাকমা, মেহনাজ আক্তার, ঐশ্বর্য রহমান তিতাসরা খেলেছিলেন মাদ্রিদে। এবারের দলে আছেন অলিম্পিয়ান সাগর ইসলাম, জুনে চীনে অনুষ্ঠিত এশিয়ান কাপ স্টেজ-২ এ স্বর্ণজয়ী আব্দুর রহমান আলিফ, রাকিব মিয়া, সীমা আক্তার শিমু, কুলছুম আক্তার মনি, হিমেল সারোয়ার, নাহিদ হাসান, ইমতিয়াম আমিন ফাতেমি ফুয়াদ ও সোনালী রায়।

ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ আবার আগামী বছর সেনেগালের ডাকারে অনুষ্ঠিতব্য সামার ইয়ুথ অলিম্পিকের বাছাইয়েরও অংশ। অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগ থেকে কোয়ালিফাইয়ের সুযোগ আছে।

আরচারির জার্মান কোচ মার্টিন ফ্রেডরিক সোমবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, এখান থেকে সরাসরি অলিম্পিক কোয়ালিফাই করা যাবে না। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের পর ওয়ার্ল্ড আরচারি থেকে ঘোষণা করা হবে কারা অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করবে। সেই সুযোগের অপেক্ষায় থাকতে হলে আমাদের ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে শীর্ষ দশের মধ্যে জায়গা করে হবে। শুধু একক ও মিশ্র দলীয় ইভেন্টে অলিম্পিকে খেলার সুযোগ পাবে দেশগুলো।

সাগর ইসলাম, আবদুর রহমান আলিফরা অনূর্ধ্ব-২১ দলে। তাই তাদের অলিম্পিকে কোয়ালিফাইয়ের বিষয় নেই। গত প্যারিস অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করে অংশ নেওয়া সাগর ইসলাম প্রথমবারের মতো ইয়ুথ ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে খেলবেন। তার লক্ষ্য একটাই নিজের সেরা পারফরম্যান্স করে দেশকে ভালো কিছু উপহার দেওয়া।

সোমবার সন্ধ্যায় তিনি জাগো নিউজকে বলেছেন, আমি কখনো জুনিয়র ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ খেলিনি। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সর্বশেষ খেলেছিল ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে। তখন আমি আরচারিতে আসিনি। ২০২১ সাল থেকে আমি আরচারি খেলি। তার মানে ৬ বছর আগের আসরের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। আমি সাধারণত সিনিয়র প্রতিযোগিতায় খেলে থাকি। প্রথম জুনিয়র ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে খেলবো।

আপনি অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করে দারুণ কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন। একজন অলিম্পিয়ান হিসেবে খেলতে যাচ্ছেন ইয়ুথ ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে। আপনি জানেন এটা বিশাল এক মঞ্চ। কি লক্ষ্য থাকবে আপনার এই প্রতিযোগিতায়? সাগর ইসলামের জবাব, আমি অনেক দিন ধরেই সিনিয়র দলে খেলি। আমরা অনেক দিন ধরে একসাথে অনুশীলন করেছি। আমাদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া আছে। যদি নিজের সেরাটা দিতে পারি তাহলে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে ভালো কিছু করার সম্ভাবনা থাকবে।

ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে পুরুষ দলের কোচ হিসেবে যাওয়ার কথা মো. নুরে আলমের। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আগের ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে বিভিন্ন দেশের যেসব আরচার সেরা দশের মধ্যে ছিলেন, তাদের স্কোরকে স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে ধরে আমরা এই ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের আরচার নির্বাচন করেছি। ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় কার কত স্কোর এবং সেই স্কোর আগের প্রতিযোগিতার সাথে কতটা স্ট্যান্ডার্ড সেগুলো বিবেচনা করে দল গঠন করা হয়েছে।

৯ জন আরচারকে কানাডা পাঠানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সবার ভিসার জন্য আবেদন করা হয়েছে। তবে কতজন ভিসা পাবেন তার ওপর নির্ভর করছে শেষ পর্যন্ত কয় সদস্যের দল অংশ নিতে পারবে ইয়ুথ ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে।

বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ জাগো নিউজকে বলেছেন, ভিসার জন্য আমাদের যা করার, করেছি। আমরা এর মধ্যে কানাডায় মেইল করেছি। কোনো উত্তর পাইনি। ৯ খেলোয়াড়, ২ কোচ ও ১ ম্যানেজার-এই ১২ জনের দলের ভিসার আবেদন করা হয়েছে। ভিসা পাওয়ার পর বুঝতে পারবো কয়জনকে পাঠাতে পারবো। সবাই ভিসা পেলে সবাই যাবেন।

সিনিয়র দুই আরচার সাগর ইসলাম ও আবদুর রহমান আলিফকে নিয়ে বেশ আশাবাদী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। কানাডা থেকে ফিরেই তাদের প্রস্তুতি নিতে হবে সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের। দক্ষিণ কোরিয়ার গুয়াংজুতে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলােদেশ থেকে ৮ জন আচার পাঠানো বলে জানিয়েছেন তানভীর আহমেদ।

আরচারদের বর্তমান পারফরম্যান্স তানভীর আহমেদকে বেশ আশাবাদী করে তুলেছে। ২০২৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে অনুষ্ঠিতব্য সামার অলিম্পিকে কোয়ালিফাইয়ের যোগ্যতা রাখেন বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন আরচার-এমনটিই বলেছেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক।

আরআই/এমএমআর/এমএস

Read Entire Article