কখনো কোমরপানি, কখনো কোলে চড়ে স্কুলে যায় শত শিক্ষার্থী

3 hours ago 3

নাটোরের সিংড়া উপজেলার ইটালি ইউনিয়নের শালমারা এলাকায় কখনো কোমরপানি কখনো হাঁটুপানি মাড়িয়ে স্কুল ও মাদ্রাসায় যেতে হচ্ছে শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে। জলাবদ্ধতার কারণে প্রতিদিন ভিজছে শিশুদের জামা-কাপড়, বই-খাতা। দুর্ভোগে পড়েছেন অভিভাবকরাও।

শালমারা ধামাইচ ইসলামিয়া সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসা ও ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত শালমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে চরম ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যাতায়াত করছে। বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটিতে কোমরসমান পানি জমে থাকে। ফলে শিশুদের নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে পৌঁছানো যেমন কষ্টকর হয়ে উঠেছে, তেমনি শারীরিকভাবেও রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকি।

শিশু শ্রেণি ও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভেজা পোশাক আর স্যাঁতসেঁতে বইখাতাসহ ক্লাসে উপস্থিত হয়। অনেকে আবার পথেই পড়ে যায় পানিতে। শিক্ষার্থীদের কষ্ট দেখে স্কুলের দপ্তরি কাম প্রহরী হাবিল শেখ এবং কিছু অভিভাবক সন্তানদের কোলে করে স্কুলে পৌঁছে দিচ্ছেন। ক্লাস শেষে আবার কোলে করেই বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।

স্থানীয় অভিভাবক রহিমা বেগম বলেন, গত প্রায় ১৫ দিন ধরে কোমর পানি জমে রয়েছে রাস্তার ওপর। আমাদের ছেলেমেয়েদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে পাঠাতে হচ্ছে। যদি এ রাস্তাটি দুই-তিন ফিট উঁচু করা হতো, তাহলে এমন কষ্ট হতো না।

স্থানীয় বাসিন্দারাও অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তার সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি। অথচ এটি স্কুল, মাদ্রাসা ও এলাকার সাধারণ মানুষের একমাত্র চলাচলের পথ। পানি নামার পরপরই রাস্তাটি মেরামত করে উঁচু না করা হলে ভবিষ্যতে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

স্থানীয় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়ে এলাকাবাসীর দাবি, শিশুদের ভবিষ্যৎ ও এলাকার স্বাভাবিক জনজীবনের স্বার্থে এ রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রাব্বানী জানান, শালমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটি এতটাই নিচু যে সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়। এখন বর্ষার শুরুতেই পুরো রাস্তায় কোমরপানি জমে আছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন পানির মধ্য দিয়ে যাতায়াত করছে, যা কেবল দুঃখজনক নয়, অত্যন্ত বিপজ্জনকও। এতে শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসার আগ্রহ কমে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে এবং নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখতে আমরা দ্রুত রাস্তাটি দুই থেকে তিন ফিট উঁচু করে সংস্কার করার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অফিসার (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। এলাকাবাসী অথবা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিখিত আবেদন দিলে সরেজমিন দেখে দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Read Entire Article