কনকনে শীতে বিপাকে পঞ্চগড়ের মানুষ, তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি

2 weeks ago 9

হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতের কাছাকাছি হওয়ায় পঞ্চগড়ে বয়ে যাচ্ছে হিমশীতল ঠান্ডা বাতাস ও কনকনে তীব্র শীত। এই তীব্র শীতে বিপাকে পড়ছেন পঞ্চগড়ের মানুষ। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৯%। যা গতকাল বুধবার সকাল ৯ টায় ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বিকেল ৩টায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে হিসেবে সকালের তাপমাত্রা বাড়লেও কুয়াশা ও হিমবাতাসের কারণে শীতের প্রকোপে পড়েছে এ উত্তরের জনপদ।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর থেকেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে পুরো জেলা। শহর ও গ্রামের সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন। শীতের কারণে প্রয়োজনের বাইরে অনেকে ঘরের বাইরে বের না হলেও নিম্ন আয়ের কর্মজীবী মানুষগুলো জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছে।

সকাল ৭টার দিকে ঘন কুয়াশার মধ্যে পাথরের সাইটে কাজে বেড়িয়েছেন জয়নব নামের এক নারী। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ১০ হাত দূরে কিছু দেখা যাচ্ছে না। কনকনে ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশায় চারদিকে অন্ধকার। কিন্তু কাজে বের হতে হয়েছে। কাজ না করলে খাবার পাব কই। শরীরের ভেতর ঠান্ডা লাগছে।

ভ্যান চালক রবিউল ইসলাম বলেন, প্রচণ্ড কুয়াশায় কিছু দেখা যাচ্ছে না। কনকনে ঠান্ডার মধ্যে যাত্রীরা সহজে ভ্যানে কেউ চড়তে চান না। কিন্তু কী করবো এই ভ্যান চালিয়ে আমাদের চলতে হয়। শীতের কারণে জ্বর-সর্দি, কাশিতেও ভুগছি।

শীতের তীব্রতায় বিপাকে পড়েছে চা, পাথর, কৃষি শ্রমিক ও স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া মানুষজন। তীব্র ঠান্ডায় অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টাও করছে। তবে দিনের বেলা তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও সন্ধ্যার পর থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হয়। শীতে কষ্টে পড়েছে জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদী অঞ্চলের  দরিদ্র মানুষজন।

এদিতে শীতের কারণে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল ও  অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীদের ভিড়। শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সহকারী কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় কালবেলাকে জানান, উত্তরের হিমশীতল ঠান্ডা বাতাস বইছে এবং গতকালও থেকে কুয়াশার আবরণে ঢাকা পড়েছে উত্তরের এ জেলা। আজও কুয়াশা বেশি পড়েছে। তবে তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রির মধ্যেই ওঠানামা করছে । যা গতকাল বুধবার সকাল ৯টায় ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

Read Entire Article