টাকা নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে স্ত্রীকে খুন করে জঙ্গলে ফেলে দেন স্বামী। পরে পুলিশ ওই নারীর মরদেহ কেওনঝরের একটি জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে। ভারতের ওড়িশায় এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই নারী হলেন শুভমিত্রা সাহু। পারাদ্বীপের বাসিন্দা হলেও তিনি কর্মসূত্রে ভুবনেশ্বরে থাকতেন। সেখানেই তিনি ট্রাফিক পুলিশে কর্মরত ছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ভুবনেশ্বরে থাকাকালীন শুভমিত্রা গোপনে দীপক রাউত নামের এক যুবককে বিয়ে করেন। তিনিও পুলিশে কর্মরত।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৬ সেপ্টেম্বর কাজের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন শুভমিত্রা। কিন্তু আর ফিরে আসেননি। দুদিন ধরে তার খোঁজ না পেয়ে থানায় ডায়েরি করেন শুভমিত্রার মা। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। জানা গেছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে দীপককে বিয়ে করেন শুভমিত্রা। এরপর স্ত্রীর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন দ্বীপক। পরে এই টাকা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়।
তাদের দুজনকে একসঙ্গে শেষবার দেখা যায় ভুবনেশ্বরে। এরপরই থেকেই দীপককে সন্দেহের আওতায় আনে পুলিশ। পরে বুধবার তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় দীপক স্বীকার করেন গত ৬ সেপ্টেম্বর কর্মস্থল থেকে শুভমিত্রাকে নিজের গাড়িতে নিয়ে যান দীপক। গাড়িতেই শুভমিত্রাকে শ্বাসরোধে খুন করেন তিনি। এরপর মরদেহ কেওনঝরের ঘাটগাঁও এলাকার একটি জঙ্গলে পুঁতে রাখেন।
পুলিশ জানায়—অনেক টাকা দেনা হওয়ার কারণ, স্ত্রীর কাছ থেকে ধার করে তার পরিশোধ করেন দ্বীপক। পরে দীপক আরও টাকা দাবি করতে থাকেন। তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। আর এর জের ধরেই স্ত্রীকে খুনের পরিকল্পনা করেন দীপক।
পুলিশ জানিয়েছে, শুভমিত্রা নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ পাওয়ার পর বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানায় তল্লাশি চালানো হয়। কারণ শুভমিত্রার ফোনের টাওয়ার লোকেশন সেখানেই দেখাচ্ছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে তার হদিস না পাওয়ায় শুভমিত্রার কর্মস্থলে খোঁজ নেওয়া হয়। সেখানে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে একটি গাড়ি চিহ্নিত করে পুলিশ। সেই গাড়ির সূত্র ধরে দীপকের হদিস পান তদন্তকারীরা। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।