কবরস্থান পৈতৃক ভিটা
মৃত্যু সে তো এক মুহূর্তের ঝড়
প্রতিদিন প্রতি মিনিট প্রতি ঘণ্টা
তার জন্য এত আয়োজন রসিকতা নয়!
আজকাল মৃত্যুকে মনে হয় কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য
বাজানোর তীব্র আকাঙ্ক্ষা থাকার পরও
শখের ভায়োলিন ছুঁয়ে দেখা হলো না
শতবার চেষ্টা করেও সুর তোলা যায়নি বাঁশি
জীবনের ভাগফল শূন্য যোগফল শূন্য।
ফাঁসির দড়ি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা জল্লাদও
স্বজন হতে পারে অনায়াসে।
চরম বিরক্তিকর লাগে বন্ধনে আটকে থাকা
চিরতরে চলে যাওয়া স্থানই কি পৈতৃক ভিটা
চাহিদা, অপমান ও হতাশার পৃথিবীতে
একমাত্র কবরস্থানে পৈতৃক ভিটা ও
উত্তরাধিকার পৈতৃক ভিটায় যারা ঘুমিয়ে আছে
কেবল তারাই পরমাত্মীয়। বাকি সব মেকি
এই যে বেঁচে থাকা কীসের মোহে কী আশায়।
মৃত্যু অথবা আমি একে অপরের পরমাত্মীয়।
****
আত্মহত্যা অথবা উচ্ছিষ্ট
পরপর কয়েকবার আত্মহত্যা করতে গিয়ে
বিষাক্ত পোকামাকড় লোভী শেয়ালের হাঁক
কুকুরের কান্না বাধ্য করে ফিরে আসতে।
আত্মহত্যা করতে গিয়ে দেখি স্তূপে স্তূপে
উচ্ছিষ্ট খাবার, উদর ভরতে বেরিয়ে আসে
লম্বা জিহ্বা, কে বা কারা হাতের লাঠি দিয়ে
সপাং শব্দে বসিয়ে পিঠ বরাবর। চিৎকার
করে ডেকে উঠতে পারি না, কেননা এতে
আঘাতের বেগ ও পরিমাণ আরও তীব্র হবে।
দেশের নোংরা রাজনীতির বুলডোজারে পিষ্ট
জেলে বেদম মারপিট খাওয়া শরীর যেমন
আন্দোলনে নামতে চায় না। তেমনই আত্মহত্যা
অন্তিম ইচ্ছা, ভেতরের বুনো শুয়োরের সাথে
পাল্লা দিয়ে অস্তিত্ব রক্ষার প্রতিযোগিতা করে।
নিস্তব্ধ তালপুকুরে আকাশ যেমন উপুড় হয়ে পড়ে
ঝুলন্ত শরীর না ঘুমিয়ে ইঙ্গিত দেয় তার খাদ্য চাই।
ব্রহ্মপুত্রের জলে অতলে ঝাঁপ দিতে গিয়ে দেখি
তার বুকের ভেতরটা ব্রাশফায়ার করা।
ক্ষত-বিক্ষত নদীর জলে আত্মহত্যা হলো না
নদীটি অসহ্য চিৎকার করে তাড়িয়ে দেয়।
অথচ আত্মহত্যাই ছিল একমাত্র মুক্তির বার্তা।
এসইউ/জেআইএম