কাঠগড়ায় কাঁদতে কাঁদতে কামাল বললেন, ‘হাসিনাকে ছাত্রদের দাবি মেনে নিতে বলেছিলাম’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন বলে দাবি করেছেন সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে বলেছিলাম, ছাত্রদের দাবি মেনে নিতে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের স্বপক্ষে এই বক্তব্য রাখার কারণে আমার গণভবনে ঢোকা নিষেধ ছিল।
সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইসতিয়াকের আদালত শুনানি নিয়ে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। আদালতে কথা বলতে বলতে একপর্যায়ে কামাল আহমেদ মজুমদার কাঁদতে থাকেন। তিনি আদালতকে বলেন, একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে।
আদালতে কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, দেশে যদি সত্যিকারের আইনের শাসন থাকত, তাহলে আমাকে এভাবে হয়রানি করা হতো না। একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। বাদীর কোনো খবর নেই। এখন আমার পরিবার বাসায় থাকতে পারছে না। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আদালতের প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
তবে কামাল আহমেদ মজুমদারের এসব বক্তব্য অসত্য বলে দাবি করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি আদালতকে বলেন, জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশ যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, যে গণহত্যা হয়েছে, সেটি পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। মিথ্যা মামলা দায়েরের কথা বলা মানে হচ্ছে, খুনের শিকার সেই সব নিহত সন্তানদের সঙ্গে পরিহাস।
তিনি বলেন, কামাল আহমেদ মজুমদার বলছেন, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি মানুষ হত্যা করা? দিনের ভোট রাতে করা? ভোটবিহীন বছরের পর বছর ক্ষমতায় থাকা? মানুষ গুম করা? হত্যা করা? উনি কেন দাবি করেন, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা?
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত রাজধানীর মিরপুর থানায় দায়ের করা দুটি হত্যা মামলায় কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।