নামাজ শুরুর এক ঘণ্টা আগেই কানায় কানায় পূর্ণ ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে এ চিত্র দেখা যায়। এবার ১৯৮তম ঈদুল ফিতরের জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এবার দীর্ঘ ১৫ বছর পর ঈদুল ফিতরের জামাতে ইমামতি করবেন কিশোরগঞ্জ শহরের বড় বাজার মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদরাসার প্রভাষক মাওলানা জুবায়ের ইবনে আব্দুল হাই।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান।
প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদের দুইদিন ও একদিন আগেই চলে এসেছেন অনেক মুসল্লি। ঈদের দিন ভোর থেকে রিজার্ভ বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে আসতে থাকেন লাখ লাখ মুসল্লি।
হবিগঞ্জ থেকে আসা মুসল্লি শাহেদ আলী বলেন, ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করতে রোববার বিকেলেই চলে এসেছি। এটি একটি প্রাচীন ঈদগাহ ময়দান। এখানে লাখ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করে। তাই এখানে এসেছি। সবাই মিলে আল্লাহর কাছে দেশ ও মুসলিম উম্মার জন্য দোয়া করবো।
ঈদুল ফিতরের জামাতে অংশ নিতে মাদারীপুর থেকে এসেছেন বজলুল হুদা। তিনি বলেন, ২৫ বছর ধরে শোলাকিয়ায় জামাতে নামাজ পড়তে আসি। এখানে লাখ লাখ লোকের সঙ্গে নামাজ পড়ে মনের তৃপ্তি পাওয়া যায়।
ঈদগাহ মাঠের নিরাপত্তায় পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য কাজ করছেন।
কিশোরগঞ্জের হযরত নগর সাহেব বাড়ির পূর্বপুরুষ শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ তার নিজস্ব তালুকে নরসুন্দা নদীর তীরে ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ৭ একর জমির ওপর ‘শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান’ প্রতিষ্ঠা করেন। এমনকি তার ইমামতিতে এ ঈদগাহ ময়দানে প্রথম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মো. রমজান আলী জানান, বিগত ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের ইমামকেও পরিবর্তন করা হয়েছিল। যাকে (ফরীদ উদ্দীন মাসুদ) এই ঐতিহাসিক ঈদগাহ ময়দানে ইমামতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তিনি একজন বিতর্কিত আলেম। এই কারণে অনেক মুসল্লি শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশ নিতেন না। ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে এবার সর্বোচ্চ মুসল্লি শোলাকিয়ার ঈদ জামাতে অংশ নিচ্ছেন।
এসকে রাসেল/এফএ/এমএস