ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পৃথক স্থানে দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৪৫ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ এড়াতে উভয় স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের মনসুরাবাদ গ্রামে ও তুজারপুর ইউনিয়নের সরইবাড়ি গ্রামে দফায় দফায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) বাবর আলী ও সাবেক ইউপি সদস্য আকরামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর আগেও দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
ঈদের দিন রাতে আকরাম আলী পক্ষের মাজহারুল ইসলাম নামের একজনকে বাবর আলী পক্ষের লোকজন মারধর করে। এর জের ধরে ঈদের পরদিন মঙ্গলবার বিকেলে আকরাম ও বাবর আলী দলের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী দুই পক্ষের প্রায় এক কয়েক শত সমর্থক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু করে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন আহত হন।
এ সময় মনসুরাবাদ বাজারের কমপক্ষে ১০/১৫টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর আহত ১৫ জনকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা। বাকি আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে আহতদের নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের সরইবাড়ি গ্রামের কবির খাঁর সঙ্গে হাবি তালুকদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার বিরোধ চলে আসছিল। ঈদের দিন রাতে কবির খাঁর এক আত্মীয় বাড়ি যাওয়ার পথে হাবি তালুকদারের লোকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি পরে হাতাহাতি হয়। এর জের ধরে ঈদের পরদিন মঙ্গলবার সকালে উভয় গ্রুপের লোকজন ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সকাল থেকে চলা সংঘর্ষ দফায় দফায় রাত ১০টা পর্যন্ত চলতে থাকে। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ২০ জন আহত হন এবং দুই পক্ষের ছয়টি বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের গুরুত্বর আহত প্রায় ১০ জনকে ভাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পৃথক স্থানে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উভয়স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এন কে বি নয়ন/এমআরএম