সাত দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর শিশুমেলা সংলগ্ন মিরপুর সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা। এতে বন্ধ হয়ে গেছে এই রুটে যান চলাচল। ফলে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। ভোগান্তিতে পড়েছেন এ রুটে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার পর থেকেই শিশুমেলা সড়কে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ে আন্দোলন শুরু করেন জুলাই আন্দোলনে আহত পঙ্গু হাসপাতাল ও চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা। দুপুর আড়াইটা নাগাদ এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে বলেও জানান তারা।
আন্দোলনকারী মো. আইয়ুব হোসেন বলেন, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা সড়কে অবস্থান করবো। যদি উপদেষ্টারা কেউ এসে আমাদের আশ্বস্ত করেন তবুও আমরা রাস্তা ছাড়বো না। তাদের ওপর থেকে আমাদের আস্থা হারিয়ে ফেলেছি। এখন আর আশ্বাসে চলবে না। বিকেল ৪টার মধ্যে আমাদের দাবি আদায় না হলে আমরা সচিবালয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবো।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর শ্যামলী শিশুমেলার ফুটওভার ব্রিজের নিচে অবরোধ করে দাবি আদায়ের কর্মসূচি পালন করছেন তারা। ফলে গাবতলী থেকে ধানমন্ডিগামী ও ধানমন্ডি থেকে গাবতলীগামী সড়কের দুই পাশে দেখা দিয়েছে দীর্ঘ গাড়ির জট।
টানা প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির ফলে গাড়ি থেকে নেমে শত শত মানুষ পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন গন্তব্যের উদ্দেশে।
- আরও পড়ুন
মিরপুরে সড়কে ঠায় দাঁড়িয়ে যানবাহন, বাড়ছে জনদুর্ভোগ
বাঁশ ফেলে গুলশান-মহাখালী সড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ
ইনকিলাব মঞ্চের মিছিলে পুলিশের বাধা, শিক্ষা ভবন মোড়ে অবস্থান
রাজধানীর গাবতলী থেকে গুলিস্তানে যাচ্ছেন আরিফ হাসান। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, গাবতলী থেকে গাড়িতে উঠেছিলাম গুলিস্থান যাবো। কিন্তু টেকনিক্যাল পার হতেই যানজটে আটকে আগে বাস। টেকনিক্যাল থেকে হাঁটতে হাঁটতে কেবল শ্যামলী পর্যন্ত আসতে পেরেছি। আরও কতদূর হাঁটতে হবে কে জানে!
পরিবার নিয়ে আজিমপুর থেকে শিশু হাসপাতালে এসেছেন রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাচ্চাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য শিশু হাসপাতালে এসেছি। ধানমন্ডি পর্যন্ত এসে গাড়ি বন্ধের কারণে যানজটে পড়ি। পরে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে মোহাম্মদপুরের ভেতর দিয়ে অনেক কষ্টে এই পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছি। এখানে সড়ক অবরোধের কারণে মোহাম্মদপুরের ভেতর দিয়েও অনেক যানজট লেগে গেছে।
এর আগে গতকাল শনিবার রাতে পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা। এসময় তারা সাত দফা দাবি জানান। সেগুলো হলো-
১. চব্বিশের যোদ্ধাদের মধ্যে আহত এবং শহীদদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ বিচার করতে হবে।
২. বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের সরকারের বিভিন্ন পদ থেকে অপসারণ ও গ্রেফতার করতে হবে।
৩. আহতদের ক্যাটাগরি সঠিকভাবে প্রণয়ন।
৪. আহতদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে বাস্তবায়ন।
৫. আহতদের চিকিৎসার সর্বোচ্চ সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. আহত এবং শহীদদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননাসহ প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এবং
৭. আহতদের আর্থিক অনুদানের অঙ্ক বৃদ্ধিসহ ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার বিষয় সুসংহত করতে হবে।
কেআর/কেএসআর/জেআইএম