কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দিলেন খায়রুল কবির

1 month ago 12

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকনকে দলের পক্ষ থেকে যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে তার জবাব দিয়েছেন তিনি।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) খায়রুল কবির খোকন নিজেই বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দলের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমি নিয়মানুযায়ী চিঠির জবাব দিয়েছি।

কারণ দর্শানোর জবাবে যা বললেন খায়রুল কবির
আমাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্ব জুলকারনাইন সায়ের সাহেবের ফেসবুক পোস্ট প্রসঙ্গে আমার বক্তব্য নিম্নরূপ

১. জুলকারনাইন সায়ের তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ৩১ আগস্ট আমাকে কেন্দ্র করে একটি পোস্ট দিয়ে যেসব ঘটনার বিষয়টা অবতারণা করেছেন তা একান্তই সত্যের অপলাপ ছাড়া আর কিছুই নয়। এবং এতে একটি অনভিপ্রেত বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে আমাকে কেন্দ্র করে, যা রীতিমতো আমার জন্য অস্বস্তিকর।

২. প্রকৃতপক্ষে ওই দিন অর্থাৎ ৩১ আগস্ট আনুমানিক রাত ৮টায় আমি গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় (অবশ্যই কোন পাঁচতারকা হোটেল নয়) ২০০১-২০০৬ শাসনামলের এক সরকারি কর্মকর্তার (যিনি দীর্ঘবছর ধরে পদবঞ্চিত হয়েছিলেন) সঙ্গে দলের গুলশান কার্যালয়ে যাওয়ার পথে সাক্ষাৎ করতে যাই। আমার জেলা নরসিংদীর জন্য একজন যোগ্য সৎ জেলা প্রশাসক নিয়োগের স্বার্থে কথা বলতে সেখানে উপস্থিত হই। ওখানে স্বাভাবিকভাবেই অবস্থানকালে পূর্বপরিচয়ের সূত্রে আমরা একত্রে চা পান করি ও পারস্পরিক কুশলাদি বিনিময় করি।

এ সময়ে এনামুল হক দোলন নামে এক আত্মীয় আমাকে ফোন করে কোথায় আছি জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। আমি ক্রাউন প্লাজার রেস্টুরেন্টে আছি জানালে তিনি আমার সঙ্গে দেখা করেন।

আরও পড়ুন

উল্লেখ্য দোলন বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সাবেক সভাপতি। সমিতি সংক্রান্ত বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকের ছোট ছেলে সায়েম সোবহান আনভিরের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব ও জটিলতার কথা জানিয়ে বলে তারা এ ব্যাপারে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ইসরাক হোসেনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করে সমস্যাটি তুলে ধরেছেন।

দোলন আমাকে আরও জানায়, মির্জা আব্বাস ভাইকে বিষয়টি জানালে তিনি আমার এলাকার লোক হিসেবে তাকে আমার সঙ্গে দেখা করতে পরামর্শ দেন। দোলন একপর্যায়ে ফরিদুল ইসলামের সম্মুখে তাদের সমিতি সংক্রান্ত সমস্যাটি তুলে ধরলে আমি অপ্রস্তুত ও বিব্রতবোধ করি, কারণ এটি আমার রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বিষয় নয়।

এখানে উল্লেখ্য যে ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে যখন আমি সেখানে অবস্থান করি তখন একপর্যায়ে ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তরের সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম, গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান, কৃষিবিদ হারুনুর রশিদসহ অনেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়, কথা হয়। অর্থাৎ বিষয়টি গোপন বিষয় ছিল না।

৩. আমার আদৌ জানা ছিল না দোলন আমার সঙ্গে দেখা করতে আসার নামে তার সঙ্গে অন্য কাউকে আসবে কি না। কিন্তু ঘটনাস্থলে এসে দোলন তাদের সমিতি সংক্রান্ত সমস্যার কথা তুলতে গিয়ে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা নামক ব্যক্তির সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেন। মিস্টার আগরওয়ালা নামের ব্যক্তিকে আমি কখনই চিনতাম না তার সঙ্গে আমার পূর্বপরিচয়ও ছিল না। ঘটনাটি একেবারেই আকস্মিক, যা আমাকে রীতিমতো বিব্রত ও অপ্রস্তুত করেছে।

৪. বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সাবেক সভাপতি এনামুল হক দোলন তাদের সমিতিকেন্দ্রিক ঝামেলার বিষয়ে আমাকে আমাদের দলের মহাসচিব ও সিনিয়র যুব মহাসচিবের সঙ্গে ওই বিষয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে দেওয়ার অনুরোধ জানালে আমি তাতে অপারগতা জানাই। এবং তাকে সাফ জানিয়ে দিই এসব বিষয়ে আমাদের কোনো করণীয় নেই। কেননা আমি শুরুতেই ঘটনা শুনে অপ্রস্তুত বিব্রতবোধ করেছিলাম।

৫. উপরোক্ত বিষয়ের আলোকে আমি দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই, আমার ছাত্র-জীবনের রাজনীতি-লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস এবং জাতীয় রাজনীতিতে আমার ত্যাগ, অবিচলতা, আনুগত্য, শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা ও নৈতিকতার প্রশ্নে আপসহীন অবস্থানের কথা দলের প্রতিটি নেতাকর্মী অবগত। আমার ইন্টিগ্রিটির প্রশ্নে তারা আস্থাশীল বলেও আমি বিশ্বাস করি।

৬. তবুও জুলকারনায়েক সায়েরের ফেসবুক পোস্টের উল্লিখিত বিষয়ের প্রতি আমারও দৃষ্টি এড়ায়নি। ওই বর্ণনার সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে বাস্তবতা ও সত্যের লেশমাত্র মিল নেই। তবুও আমি আমাকে কেন্দ্র করে এসব বিষয়ের অবতারণা হওয়ায় আমি মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছি ও বিব্রত হয়েছি। আশাকরি, যারা আমাকে দীর্ঘ সময় ধরে চেনেন জানেন তারা আমাকে কেন্দ্র করে অসত্য তথ্যে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।

কেএইচ/এমএএইচ/এমএস

Read Entire Article