কীসের ‘ব্যর্থতায়’ পদত্যাগ করছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী?

1 week ago 8

আবারও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে জাপান। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা মাত্র এক বছরের কম সময় দায়িত্ব পালনের পর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।

বিশ্বের অন্যতম স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক দেশ জাপান বর্তমানে একাধিক বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে—প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েন, চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ও দীর্ঘস্থায়ী অর্থনৈতিক সংকট। এসব সমস্যা তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতির প্রতি হতাশ করে তুলেছে। তবে ইশিবার পদত্যাগে দেশটিতে নেতৃত্ব সংকট আরও গভীর হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের এশিয়া পলিসি স্টাডিজ সেন্টারের পরিচালক মিরেয়া সোলিস সতর্ক করে বলেছেন, জাপান আবারও ‘অস্থির নেতৃত্বের রাজনীতিতে’ ফিরে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটিতে একের পর এক প্রধানমন্ত্রীর বদল ঘটবে অথবা উল্টো ডানপন্থি জনতাবাদী রাজনীতির উত্থান আরও জোরদার হতে পারে।

ইশিবার পদত্যাগের কারণ

গত কয়েক দশক ধরে স্থিতিশীল অর্থনীতি থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে জাপানে মূল্যস্ফীতি প্রায় তিন শতাংশে পৌঁছেছে। বিদেশি কর্মী ও পর্যটকদের আগমন বাড়ায় বর্ধিত অভিবাসনবিরোধী মনোভাব, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে অনিশ্চিত বাণিজ্য সম্পর্ক এবং শুল্ক আরোপের হুমকি জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বাড়িয়েছে।

এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি, চালের সংকট ও নির্বাচনে বড় ধরনের পরাজয়। গত জুলাইয়ের নির্বাচনে ইশিবার নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) বড় ধাক্কা খেয়ে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেই সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে। ওই নির্বাচনে দলটি ৬৬ আসনের মধ্যে ১৯টিতে হেরে যায়। ফলে ডানপন্থি নতুন রাজনৈতিক শক্তি তরুণ ভোটারদের কাছে জনপ্রিয়তা পায়।

অবশেষে ৬৮ বছর বয়সী ইশিবা দায়িত্বে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে বলেন, এটি আমার জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক সিদ্ধান্ত। গত এক বছরের নির্বাচনী ফলাফলের দায়ভার আমি নিচ্ছি।

এরপর কী?

এখন প্রধান প্রশ্ন হলো—কে হবেন জাপানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। শিগগিরই এলডিপি নেতৃত্ব নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করবে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন—

* কৃষিমন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি (জনপ্রিয় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে)
* সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে-সমর্থিত কট্টর ডানপন্থি নেতা সানায়ে তাকাইচি
* মন্ত্রিপরিষদের সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি
* সাবেক অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী তোশিমিৎসু মোতেগি
* নিম্নকক্ষের সদস্য তাকায়ুকি কোবায়াশি

রাজনৈতিক বিশ্লেষক টোবিয়াস হ্যারিস বলেন, এলডিপি এখন এক ‘পরিচয় সংকটে’ ভুগছে। তারা কি আবে-সমর্থিত আদর্শিক রক্ষণশীল দলে পরিণত হবে, নাকি পুরো জাতিকে প্রতিনিধিত্ব করার মতো ‘বড় ছাতা’ রাজনৈতিক দল হয়ে উঠবে—এই সিদ্ধান্তই তাদের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে।

সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস
কেএএ/

Read Entire Article