কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের ঝাউদিয়া বিল পাড়ায় অনুষ্ঠিত হলো গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঝাপান খেলা। দীর্ঘ এক যুগ পর আয়োজিত এ খেলায় ভিড় জমে হাজারো দর্শকের। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে সাপুড়েদের বিষধর সাপ নিয়ে চমকপ্রদ প্রদর্শনী।
বীণ, বাঁশি আর বাদ্যের তালে তালে কাঠের বাকস ও মাটির হাঁড়ি থেকে বেরিয়ে আসে বিষধর গোখরা ও অন্যান্য সাপ। ফণা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা সাপের সঙ্গে নানা কসরত দেখিয়ে দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন সাপুড়ে দল। ১১টি দলের শতাধিক সাপ নিয়ে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ১৫ সাপুড়ে।
এ সময় দর্শকদের করতালি আর উল্লাসে মুখর হয়ে ওঠে চারপাশ। গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী এ খেলা ঘিরে ছোট-বড়, নারী-পুরুষ সবাই মেতে ওঠেন। খেলাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় এক উৎসবের আমেজ।
ঝিনাইদহ থেকে আসা সাপুড়ে সবুজ বলেন, ‘এটা বাপ-দাদার ঐতিহ্য। ছোটবেলা থেকেই শিখে আসছি। এ খেলার মাধ্যমেই জীবিকা নির্বাহ করি। সরকার যদি আমাদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে এ ঐতিহ্য টিকে থাকবে। একই সঙ্গে মানুষকে পরামর্শ দিচ্ছি— সাপে কাটা রোগীকে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।’
শৈলকুপার সাপুড়ে সোহেল বলেন, ‘বাপ-দাদারাও এ খেলা দেখাতেন। তাদের কাছে শিখে মানুষের মনোরঞ্জন করছি। কিন্তু সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় সমস্যায় পড়ছি।’
আয়োজকদের পক্ষ থেকে শাহারিয়া ইমন রুবেল জানান, ‘গ্রামের মানুষকে একত্রিত করে প্রাচীন ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতেই এ আয়োজন। আমরা চাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মও যেন এসব খেলা দেখতে পারে।’
দর্শকরা জানান, ঝাপান খেলা কেবল বিনোদন নয় বরং গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ। তবে সাপুড়েরা যেমন মানুষকে আনন্দ দিচ্ছেন, তেমনি সচেতনতার বার্তাও দিচ্ছেন।
আল-মামুন সাগর/এএইচ/জেআইএম