মন্ত্রিপাড়ায় সন্দেহজনক ঘোরাঘুরি করা মার্কিন নাগরিক কারাগারে

1 day ago 10

রাজধানীর মিন্টো রোডের মন্ত্রিপাড়ায় গাড়িতে করে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরির সময় গ্রেফতার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীকে (৫৫) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আসামিকে আদালতে উপস্থিত করে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. আজিজুল হাকিম। পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথি আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন এবং রিমান্ড শুনানির জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।

রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, এনায়েত করিম চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা হয়নি। তবে ৫৪ ধারায় তাকে চালান দেওয়া হচ্ছে।

আসামির বিরুদ্ধে রমনা থানায় হওয়া সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর মিন্টো রোডের মন্ত্রিপাড়া এলাকায় একটি প্রাডো গাড়িতে করে সন্দেহজনক চলাচল করতে দেখা যায় আসামি এনায়েত করিম চৌধুরীকে। এ সময় তার গাড়ি থামানো হয় এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় তাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। তার কাছ থেকে পাওয়া দুটি আইফোন জব্দ করা হয়। প্রাথমিকভাবে তার ফোন বিশ্লেষণ করে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।

তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জানান, তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক। তিনি গত ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে নিউইয়র্ক থেকে কাতার এয়ারওয়েজযোগে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানান, তিনি বিশেষ একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার চুক্তিভিত্তিক এজেন্ট। বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকার খুব নাজুক অবস্থায় আছে এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তিনি বর্তমান সরকারকে পরিবর্তন করে নতুন জাতীয় সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের নিমিত্তে কাজ করার জন্য বাংলাদেশে এসেছেন বলে জানান।

তিনি গত ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর সোনারগাঁও হোটেলে অবস্থান করেন। পরবর্তীতে গুলশানের বর্তমান ঠিকানায় অবস্থান করতে থাকেন। এরই মধ্যে তিনি সরকারি উচ্চ ও নীতি নির্ধারক পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেন বলে জানান। তিনি আরও জানান, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আমেরিকান সরকার হতাশ।

আগামী ২১ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় রহিত করবেন বলে জানান আসামি। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে সেনাবাহিনী সমর্থিত নতুন জাতীয় সরকার অথবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হবে। নতুন এই সরকারে কারা অংশ নেবেন এবং সরকারপ্রধান কে হবেন তা আমেরিকা নির্ধারণ করে দেবে বলে জানান।

তিনি বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটের আলোকে সরকারি ও বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বর্তমান অবস্থান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের তথ্য সংগ্রহ করে তাকে নিয়ন্ত্রিত গোয়েন্দা সংস্থার কাছে হস্তান্তর করতেন বলে জানান।

মামলায় অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি এনায়েত করিম চৌধুরী বর্তমানে বাংলাদেশের বৈধ অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার জন্য অন্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে বাংলাদেশে এসে জননিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত আছেন, যা ধর্তব্য অপরাধ।

এমআইএন/এএমএ/এমআরএম

Read Entire Article