কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রামের পুকুরে দেশি মাছের সঙ্গে চাষ হচ্ছে গলদা চিংড়ি। এতে মাছচাষের সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলেছে। সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলে অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে পিছিয়ে পড়া কুড়িগ্রাম জেলার মানুষ।
জানা গেছে, জেলার রাজারহাট উপজেলার বৈদ্যের বাজার এলাকায় পল্লব চন্দ্র রায় ৪০ শতক জমিতে প্রথমবারের মতো কার্প, পাঙাস, সিলভার কাপসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সঙ্গে গলদা চিংড়ি চাষ করেছেন। প্রায় সাত মাস আগে ৬০০ পিস গলদা চিংড়ি ছাড়া হয় তার পুকুরে। মাত্র সাত মাসের মাথায় পুকুরে বড় বড় সাইজের গলদা চিংড়ি দেখে খুশি স্থানীয়রাও।
জেলায় মিঠা পানিতে গলদা চিংড়ির চাষ এবারই প্রথম বলে জানা গেছে। পল্লি কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে ও আরডিআরএস বাংলাদেশের সহায়তায় গলদা চিংড়ি চাষ শুরু করেন তিনি।
মৎস্যচাষি পল্লব চন্দ্র রায় বলেন, একটি চিংড়ি ৮০-৯০ গ্রাম পর্যন্ত ওজন হয়েছে। এর বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১২০০ টাকা কেজি। এতে অন্তত লক্ষাধিক টাকা আয় হবে। এক খরচে দেশি মাছের পাশাপাশি গলদা চিংড়ি চাষ করায় খরচ তেমনটা হয়নি। সব মিলে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম সদর ও রাজারহাট উপজেলায় ১০ জন চাষি প্রায় চার একর পুকুরে ছয় হাজার পিস গলদা চিংড়ি চাষ করেছেন বলে জানা গেছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছি এলাকার মৎস্যচাষি মোজাম্মেল হক বলেন, ৩০ শতক জমিতে অন্য জাতের মাছের সঙ্গে আরডিআরএসের সহায়তায় ৬০০ পিস গলদা চিংড়ি চাষ করেছি। অন্য মাছের মতো চিংড়ি মাছও বেড়ে উঠছে। এখনও জাল টানিনি, তবে আশা করছি লাভবান হবো।
আরডিআরএস বাংলাদেশের কৃষি ইউনিট টিম লিডার বিদ্যুৎ কুমার সাহা বলেন, উত্তরবঙ্গে মৎস্যচাষিদের মধ্যে গলদা চিংড়ি চাষে আগ্রহ কম। তবে সুস্বাদু এই মাছ কুড়িগ্রামে চাষ হচ্ছে। এটি বৃদ্ধি করা গেলে আগামীতে উচ্চমূল্যের এই মাছ স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি করা সম্ভব। এতে করে জেলার অর্থনীতিতে নতুন মাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মুক্তাদির খান বলেন, এর আগে জেলার বিভিন্ন মৎস্য চাষিদের গলদা চিংড়ি চাষে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। সেই থেকে তারা উদ্বুদ্ধ হয়ে বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে চিংড়ি চাষের দিকে ঝুঁকছে।
এফএ/এএসএম