মানুষ যেমন সম্মানিত, মানুষের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এমনকি চুল, নখ ইত্যাদির কর্তিত অংশও সম্মানিত। তাই নখ, চুল কাটার পর ময়লার সাথে, টয়লেটে বা যেখানে সেখানে ফেলে দেওয়া উচিত নয়। বরং তা মাটির নিচে পুঁতে দেওয়া উত্তম। নাফে রাহ. থেকে বর্ণিত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. নখ, চুল কাটার পর তা মাটির নিচে পুঁতে দিতেন। (কিতাবুত তারাজ্জুল: ৬০)
নখ, চুল মাটিতে পোঁতা কষ্টকর হলে ডাস্টবিনে বা সংরক্ষিত জায়গায় ফেলে দিলে তাতেও সমস্যা নেই। তবে যেসব লোম শরীরে থাকা অবস্থায় অন্যের জন্য দেখা নাজায়েজ শরীর থেকে পৃথক হওয়ার পরও তা অন্যকে দেখানো জায়েয নয়। তাই এ ধরনের পশম ফেলার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
চুল বিক্রি ও দান করার বিধান
চুল, নখ, রক্তসহ মানুষের শরীরের কোনো অঙ্গ বা অঙ্গের কোনো অংশ বিক্রি করা নাজায়ে। তবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে রক্ত যেমন দান করা যায়, চুলও দান করা যায়। নিছক সাজ-সজ্জার জন্য মাথায় পরচুলা বা অন্যের চুল লাগানো নিষিদ্ধ হলেও অসুস্থতার কারণে চুল পড়ে গেলে, ত্রুটি সৃষ্টি হলে ওই ত্রুটি দূর করার জন্য অন্যের চুল লাগানো জায়েজ।
যেমন পুড়ে যাওয়ার কারণে বা ক্যান্সারের চিকিৎসা নিতে গিয়ে অনেকের মাথার সব চুল পড়ে যায়। তাদের জন্য অন্যের চুল মাথায় লাগানো জায়েজ এবং তাদেরকে চুল দান করাও জায়েজ তো বটেই, সওয়াবের কাজ।
কোনো সংস্থা যদি মানুষের চুল সংগ্রহ করে তা থেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত, আগুনে পোড়া বা এ জাতীয় অন্য কোনো রোগ-দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়ে চুল হারানো ব্যক্তিদের জন্য চুল বানায়, তাহলে তাদেরকেও চুল দান করা যেতে পারে।
যার মাথায় স্বাভাবিক চুল আছে, তার জন্য নিছক সাজ-সজ্জার উদ্দেশ্যে মাথায় নিজের চুলের সাথে অন্যদের চুল লাগানো নাজায়েজ। রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা সে সব নারীদের লানত করেন যারা নিজেরা পরচুলা পরে বা পরায়, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে উল্কি অঙ্কন করে বা করায়। (সহিহ বুখারি: ৫৯৩৩)
ওএফএফ/এমএস