চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল-শিবিরের দেওয়া কোনো অভিযোগের ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাচন কমিশন। বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা অনেক অভিযোগ দেওয়ার পরও কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন।
ভোটকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে ছাত্রদলের একাধিক ডেস্ক বসানো ও ভোটার লাইনে স্লিপ বিতরণের অভিযোগ করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী ইব্রাহিম হোসেন রনি। দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন তিনি।
ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, ‘এ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সারাদেশের মানুষ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। তাই চাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য কমিশনের কাছে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানিয়েছি। কেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে ছাত্রদল দুটি কেন্দ্রে দুটি ডেস্ক বসিয়েছে। এছাড়া সংগঠনটির কয়েকজন প্রার্থী ভোটারদের স্লিপ দিয়েছেন।’
এদিকে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বহিরাগতের অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় এক নম্বর সড়ক ও হাটহাজারী এলাকায় বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের জড়ো হতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে ছাত্রদলের জিএস প্রার্থী শাফায়েত জানান, ‘শিবিরের ছেলেরা লাইনে দাঁড়ানো শিক্ষার্থীদের মাঝে নম্বর ছবি সম্বলিত প্যানেলের স্লিপ দিচ্ছে। লাইনে গিয়ে সবার কাছে ভোট চাচ্ছে।’
ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিক বলেন, ‘অনেক বহিরাগত ক্যাম্পাস এলাকায় ঘুরছে। যাদের কোনো কার্ড দেখা যায়নি। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্বাচন। কোনো বহিরাগত আসলে এর দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিংবা নির্বাচন কমিশন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান দেখা গেলেও তারা ক্যাম্পাসের পাশের এলাকায় বহিরাগতদের সরিয়ে দিয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’
শিক্ষার্থীদের আশঙ্কা, ভোট গণনা চলাকালে বিশৃঙ্খলা করার মানসিকতা নিয়েই বহিরাগতরা এসেছে। তাদের না সরালে ক্যাম্পাসে সংঘাত হতে পারে।
এদিকে চাকসুর ২৬ পদের বিপরীতে ৪১৫ জন, হল সংসদে ৪৭৩ জন ও হোস্টেল সংসদের জন্য প্রার্থী ২০ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এবারের নির্বাচনে ভোটার ২৭ হাজার ৫২১ জন। এরমধ্যে ছাত্র ১৬ হাজার ৮৪ এবং ছাত্রী ১১ হাজার ৩২৯ জন।
নির্বাচনে ১৫টি কেন্দ্রে রয়েছে ৬৭টি কক্ষ। প্রতিটি কক্ষে রয়েছে পাঁচটি ব্যালট বাক্স ও পাঁচজন করে এজেন্ট। একটি কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ৫০০ ভোটার ভোট দিতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনে ১৫টি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। নির্বাচনের নিরাপত্তায় পুলিশ-র্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। এছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণে কেন্দ্রগুলোতে স্থাপন করা হয়েছে ২৫০টি সিসি ক্যামেরা।
রফিক হায়দার/আরএইচ/এমএস