‘কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না, এ জায়গা আমাদের’

6 hours ago 3
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন ভূখণ্ডকে নিজেদের জায়গা দাবি করে ‘কোনো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব থাকবে না—এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন নেতানিয়াহু। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু অধিকৃত পশ্চিম তীরে নতুন বসতি সম্প্রসারণ প্রকল্প আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দিয়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে। বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু এই প্রকল্পে স্বাক্ষর করেন, যা পশ্চিম তীরকে দ্বিখণ্ডিত করবে। মা’লে আদুমিম বসতিতে এক অনুষ্ঠানে নেতানিয়াহু বলেন, আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করছি। কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না, এ জায়গা আমাদের। তিনি আরও বলেন, শহরের জনসংখ্যা দ্বিগুণ করা হবে। ১২ বর্গকিলোমিটার জমির ওপর গড়ে ওঠা এ বসতিটি ‘ইস্ট ১’ বা ‘ই-ওয়ান’ নামে পরিচিত। এখানে ৩ হাজার ৪০০ নতুন বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পশ্চিম তীরের একটি বড় অংশ দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে, একই সঙ্গে ওই অঞ্চলের হাজার হাজার ইসরায়েলি বসতি একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। পূর্ব জেরুজালেমকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখে আসছে ফিলিস্তিনিরা। তবে ১৯৬৭ সাল থেকে দখল করা পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের সব বসতি আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে অবৈধ বলে গণ্য হয়, এমনকি সেগুলো ইসরায়েলের অনুমোদন পেলেও। আলজাজিরার প্রতিবেদক হামদাহ সালহুত জানান, এই সম্প্রসারণ পরিকল্পনা পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের ভৌগোলিক সংযোগ ধ্বংস করবে। এর ফলে ভবিষ্যতে কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হবে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনাহ বৃহস্পতিবার বলেন, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রই এই অঞ্চলে শান্তির চাবিকাঠি। তিনি একে এবং দ্বিরাষ্ট্র সমাধানকে অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেন। তিনি ইসরায়েলি বসতিগুলোকে আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেন, নেতানিয়াহু সমগ্র অঞ্চলকে অন্ধকার গহ্বরে ঠেলে দিচ্ছেন। রুদেইনাহ বলেন, এরই মধ্যে জাতিসংঘের ১৪৯ সদস্য রাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি বাকি দেশগুলোকে অবিলম্বে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান। নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরেই অধিকৃত ভূখণ্ডে বসতি স্থাপনের পক্ষে এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি শান্তি প্রক্রিয়ার বিরোধী। ১৯৯০-এর দশকে স্বাক্ষরিত অসলো চুক্তির বিরুদ্ধেও তিনি সরব ছিলেন। ২০০১ সালে ফাঁস হওয়া এক ভিডিওতে নেতানিয়াহু দাবি করেছিলেন, তিনি কার্যত ওই চুক্তির ইতি টেনেছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম মেয়াদে (১৯৯৭ সালে) নেতানিয়াহু পূর্ব জেরুজালেমে হার হোমা নামের বসতি গড়ে তুলতে সহায়তা করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বলেন, তার ক্ষমতায় থাকাকালে কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র কখনোই গঠিত হবে না। সম্প্রতি ইসরায়েলের কট্টর উগ্র ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচও বলেছেন, ই-ওয়ানের মতো বসতি ফিলিস্তিনকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলবে।
Read Entire Article