বাংলাদেশে পেটের নানা সমস্যার মধ্যে কোলন ক্যানসার এখন এক মারাত্মক জনস্বাস্থ্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অনেকেই হজমের সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক বা পাইলস ভেবে উপসর্গগুলো অবহেলা করেন। অথচ এগুলোর আড়ালেই লুকিয়ে থাকতে পারে প্রাণঘাতী কোলন ক্যানসার। ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন চিকিৎসক ডা. জিএম আব্দুস সালাম।
তিনি জানান, কোলন হলো বৃহদান্ত্রের একটি অংশ, যেখানে হজম শেষে খাবারের অবশিষ্টাংশ জমা হয়। এই অংশের কোষ অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করলে এবং টিউমার তৈরি হলে কোলন ক্যানসার হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগটির তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ না পেলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি ও কারণ
ডা. সালামের মতে, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ফাস্টফুড ও লাল মাংস খাওয়া, ফলমূল ও সবজি কম খাওয়া, ধূমপান-অ্যালকোহল, স্থূলতা, অলস জীবনযাপন, পারিবারিক ইতিহাস এবং বয়স (বিশেষ করে ৫০ বছরের পর) কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া ক্রোন’স ডিজিজ ও আলসারেটিভ কোলাইটিসের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগও ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ
এই রোগের কিছু প্রধান লক্ষণের মধ্যে রয়েছে মলে রক্ত থাকা, দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া, মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন, পেটব্যথা বা অস্বস্তি, অকারণে ওজন কমে যাওয়া, পেট ফোলা ও গ্যাস, এবং রক্তাল্পতা।
চিকিৎসা ও প্রতিকার
চিকিৎসকরা রোগের ধাপ অনুযায়ী চিকিৎসা নির্ধারণ করেন। এর মধ্যে রয়েছে সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি ও ইমিউনোথেরাপি। তিনি বলেন, শুরুর দিকে ধরা পড়লে কোলন ক্যানসার পুরোপুরি নিরাময় সম্ভব।
সতর্কবার্তা
ডা. জিএম আব্দুস সালাম পরামর্শ দিয়েছেন, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন থেকে দূরে থাকতে, সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে এবং সচেতনভাবে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করতে। তার ভাষায়— কোলন ক্যানসারকে অবহেলা করা মানেই জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলা। সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন।
এসইউজে/এমআইএইচএস/জেআইএম