গাড়ির শোরুমে গিয়ে নামি-দামি ব্র্যান্ডের প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাস কেনার নামে কৌশলে তা হাতিয়ে নিচ্ছিলো একটি চক্র। এমন একটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বিলাসবহুল চারটি গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। এসব গাড়ির মূল্য প্রায় তিন কোটি টাকা।
গ্রেফতার পাঁচজন হলেন, জারাক আহমেদ, আবুল কালাম রিফতিয়ার, জামির হোসেন, সজল আহম্মেদ ও আব্দুর রহমান রুবেল।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান।
তিনি জানান, ইমদাদুল হক খান নওশাদ একজন গাড়ি ব্যবসায়ী। তার তেজগাঁও আজিজ কোর্ট গ্রাউন্ড ফ্লোরে একটি গাড়ির শোরুম রয়েছে। এবি ড্রাইভ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারাক আহমেদ ও চেয়ারম্যান জামির হোসেনকে ২৬ নভেম্বর ও ৪ ডিসেম্বর চারটি গাড়ি ডেলিভারি দেন ভাটারার নর্দ্দা প্রগতি স্মরণি এলাকায়। গাড়ি চারটির বাজারমূল্য তিন কোটি টাকা।
পরবর্তী সময়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে গাড়িগুলো ফেরত দেওয়া হবে না বলে জানায়। এক পর্যায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। ইমদাদুল হক খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তারা গাড়িগুলো অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে। এ ঘটনায় গত ৫ জানুয়ারি ইমদাদুল হক খান জারাক আহমেদ, জামির হোসেনসহ অজ্ঞাতপরিচয়ের ২/৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার সূত্রে ধরে গতরাতে গুলশান লিংক রোড এলাকা থেকে এবি ড্রাইভ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারাক আহমেদকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও কাশিমপুর থানা এলাকা থেকে জামির হোসেনের সহযোগী আবুল কালাম রিফতিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার আবুল কালামকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিসি ইবনে মিজান বলেন, জামির হোসেন তাকে একটি টয়োটা এসকোয়্যার মাইক্রোবাস গাড়ি এবং একটি টয়োটা এক্সজিও প্রাইভেটকার তার জিম্মায় এক আত্মীয়ের বাসায় রাখতে বলে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকার আফতাবনগর এলাকা থেকে ওই গাড়ি দুইটি উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তী সময় তাকে আরও দুইটি গাড়ির কথা জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে বলে অন্য গাড়ি দুইটির বিষয়ে সজল আহম্মেদ অবগত রয়েছে। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যে সজল আহম্মেদ ও আব্দুর রহমান রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড ভূইগড় এলাকায় সাইদুর রহমানের কাছ থেকে একটি টয়োটা ভেলফেয়ার জিপ গাড়ি ও একটি টয়োটা হেরিয়ার জিপ গাড়ি উদ্ধার করা হয় বলেও জানান ডিসি ইবনে মিজান।
উদ্ধার করা এই চারটি গাড়ি অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশের মাধ্যমে আত্মসাৎ করছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
টিটি/এসএনআর/জেআইএম