ক্রীড়াঙ্গনে হট্টগোল, ব্লেম-গেম চলছেই!

15 hours ago 6
দাবা ফেডারেশনে সভাপতি নিয়ে আপত্তি। কাবাডিতে আপত্তি সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে। হকিতে নবগঠিত অ্যাডহক কমিটি নিয়েই কারোর আপত্তি। জিমন্যাস্টিকসে আবার খেলাটি সংশ্লিষ্ট অধিকাংশ ব্যক্তিকে নিয়ে আপত্তি একজনের। ক্রীড়াঙ্গনে যারা ব্লেম-গেম খেলছেন, তাদের সংখ্যা কিন্তু খুব বেশি নয়। কিন্তু তাদের উৎপাত চরমে পৌঁছেছে! মজার বিষয় হচ্ছে, দাবা, কাবাডি ও হকিতে কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়েছে অ্যাডহক কমিটি গঠনের পর। কিন্তু বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনে কমিটি গঠনের আগেই শুরু হয়েছে সেটা। অভিযোগ আছে, মসনদে আসতে ব্লেম-গেম খেলছেন সাবেক জিমন্যাস্ট মোহাম্মদ কাওছার; যিনি কোচিং কোর্স করতে গিয়ে বিদেশে পালিয়েছিলেন। দুই দফায় বহিষ্কৃত হয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কোচেস প্যানেল থেকে। সেই মোহাম্মদ কাওছার জিমন্যাস্টিকস সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে উদ্ভট সব দাবি করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করছেন। হকি ও কাবাডিতে বঞ্চিতরা আপত্তি তুলেছেন। অ্যাডহক কমিটি নিয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদ এ এ আদেল নানা আপত্তি তুললেও এখন কিছুটা নীরব। কাবাডিতে হট্টগোল চলছেই। গতকাল মানববন্ধনে বেরিয়ে এসেছে থলের বিড়াল। অ্যাডহক কমিটি নিয়ে যে হট্টগোল চলমান, তার মূলে আছেন আনোয়ার হোসেন আনু। এনএসসি টাওয়ারের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনের পর কাবাডির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার ‘খায়েশ’ খোলাসাও করেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমাকে যদি দায়িত্ব দেওয়া হয়, সবাইকে নিয়ে কাবাডিকে বিশ্বপর্যায়ে নিয়ে যেতে কাজ করব।’ খায়েশ পূরণের অংশ হিসেবে কাবাডি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরকারি নানা দপ্তরে অভিযোগ করেছেন, অন্যদের দিয়েও অভিযোগ করিয়েছেন আনোয়ার হোসেন আনু। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে আরেকজনের নামে অভিযোগ করতে গিয়ে স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছেন—অভিযোগ আছে আনোয়ার হোসেন আনুর বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে দেনদরবার করলেও জাতীয় খেলার মসনদে আসতে পারেননি। এ কারণেই ‘কাবাডি ক্লাব খেলোয়াড় সংগঠক সমিতি’ নামের উদ্ভট এক সংগঠনের ব্যানারে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন। যেখানে দাবি করা হয়, অধিকাংশ ক্লাব তাদের সঙ্গে রয়েছে। বাস্তবে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ২৫-২৬ জন। কাবাডি সংশ্লিষ্টদের দাবি, যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের তিনজন ক্লাব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। একজন সাবেক জাতীয় খেলোয়াড়। বাকিরা কাবাডি সংশ্লিষ্ট নন। তারা আনোয়ার হোসেন আনুর প্রেস এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মী। ‘দুর্নীতিবাজ সোহাগ হটাও, জাতীয় খেলা কাবাডি বাঁচাও’—শিরোনামে করা মানববন্ধনে দাবি করা হয়, ‘অ্যাডহক কমিটি সাধারণ সম্পাদক এসএম নেওয়াজ সোহাগ আট বছরে কাবাডি ফেডারেশন থেকে তুলে নিয়ে গেছেন কোটি কোটি টাকা।’ আরও দাবি করা হয়, ‘সরকার গঠিত সার্চ কমিটিকে আর্থিকভাবে ম্যানেজ করে নিজের পছন্দমতো কমিটি বানিয়ে এনেছেন এসএম নেওয়াজ সোহাগ। অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন, ফেডারেশনের কাছ থেকে ৯১ লাখ টাকা পাবেন। বিগত কমিটি ৫১ লাখ টাকা পরিশোধ করে গেছে। এখন আর তিনি কোনো টাকা পাবেন না।’ মৌলভীবাজার থেকে আসা জিল্লুর রহমান নামের এক ক্লাব কর্মকর্তা বলেন, ‘কাবাডি ফেডারেশনে যে অর্থ রক্ষিত আছে, সেখানে হাত দিলে ওই হাত গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।’ মানববন্ধনে নানা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এসএম নেওয়াজ সোহাগ বলেন, ‘আর্থিক বিষয়ে মৌখিকভাবে কিছু দাবি করলে তো হবে না। সব নথিপত্র রক্ষিত আছে। মনগড়া নানা অভিযোগ এনে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে। এটা দুঃখজনক। আমি এখানে ঝগড়া করতে আসিনি। কাজ করতে চাই, কাবাডি উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাই। এ জন্য ন্যূনতম সময় তো প্রয়োজন।’
Read Entire Article