সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি থেকে বেআইনিভাবে সাদাপাথর উত্তোলন ও অপসারণের ফলে সৃষ্ট প্রতিবেশগত ও পরিবেশগত আর্থিক ক্ষতি টাকায় নিরূপণে ২১ আগস্ট একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে (অপারেশন) আহ্বায়ক করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক অধ্যাপকসহ ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটিকে আর্থিক ক্ষতি নিরূপণ করে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিবের পক্ষে হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন রাষ্ট্রপক্ষ। আদালতে এদিন রিট আবেদনকারীদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী শুনানি করেন।
আরও পড়ুন
- আর্থিক ক্ষতি নিরূপণে বুয়েট শিক্ষকের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের নির্দেশ
- সাদা পাথর লুটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ
এ সংক্রান্ত বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জাগো নিউজকে বলেন, পাথর লুটে জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা দাখিল হয়নি এবং সম্পূর্ণ পাথর পুনঃস্থাপন করা হয়নি, তাই প্রতিবেদন অসম্পূর্ণ। শুনানি নিয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি জানিয়ে ২২ অক্টোবর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আমরা অপেক্ষায় আছি তালিকাসহ প্রতিবেদনের।
সিলেটের জেলা প্রশাসকের পক্ষে আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি ও পাথর প্রতিস্থাপনের কাজ চলছে এবং ভোলাগঞ্জের পাথর কোয়ারি এলাকা প্রতিনিয়ত নজরদারি করার কথা বলা হয়েছে।
দুই সচিবের পক্ষে দাখিল করা প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাথর লুটের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আনুমানিক ১৫০০-২০০০ জনকে আসামি করে কোম্পানিগঞ্জ থানায় ১৫ আগস্ট মামলা হয়েছে।
এর আগে ‘সিলেটের সাদাপাথর গায়েব: প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় নজিরবিহীন লুটপাট’ শিরোনামে ১৩ আগস্ট জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে চার আইনজীবী পরদিন রিট করেন।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৪ আগস্ট হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে উত্তোলন করা ও সরানো সাদাপাথর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে ভোলাগঞ্জের কোয়ারিস্থলে সাত দিনের মধ্যে পুনঃস্থাপন করতে, উত্তোলন ও সরানোয় জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করতে, কোয়ারি এলাকা সার্বক্ষণিক (দিনে ও রাতে) তদারক করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে সাদাপাথর উত্তোলন ও সরানোয় আর্থিক এবং প্রতিবেশ ও পরিবেশের ক্ষতি নিরূপণে বুয়েটের এক অধ্যাপককে নিয়ে বিশেষজ্ঞ গঠন করে আদালতে হলফনামা আকারে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর ধারাবাহিকতায় দুই সচিব ও সিলেটের জেলা প্রশাসকের পক্ষে কার্যক্রমের অগ্রগতিবিষয়ক প্রতিবেদন দাখিল করা হয় আদালতে।
এফএইচ/ইএ