পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার মাধপুর বাজারের খাসজমির ওপর নির্মিত ১৭টি স্থায়ী ও ১০টি ভাসমান দোকান থেকে মাসে অর্ধলাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ছয়জন নিজেদের বিএনপি নেতা পরিচয়ে চাঁদা তুলছেন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের পাশে এবং সাঁথিয়া থেকে পাবনা যাওয়ার রাস্তায় অবস্থিত মাধপুর বাজার। মাধপুর বাসস্ট্যান্ডের উত্তরে রয়েছে ১৬ শতাংশ খাসজমি। জায়গাটি সাঁথিয়া উপজেলা প্রশাসন দখল মুক্ত করলে বিগত সরকারের সময় আওয়ামী লীগ নেতা আরশেদ আলী ভান্ডারী জোর করে ওই স্থানে দলীয় অফিসের নামে একটি ঘর নির্মাণ করেন। এ সুযোগে অন্যরা তাকে ম্যানেজ করে পূর্ব-পশ্চিমে ১৭টি স্থায়ী ও অফিসের সামনে আরও প্রায় ১০-১২টি অস্থায়ী ভাসমান দোকান বসান।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আরশেদ আলী ভান্ডারী দোকানগুলো থেকে প্রতিমাসে ভাড়া আদায় করতেন। স্থানীয়দের দাবি, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের অফিসটি পরিণত হয় বিএনপি অফিসে। বাজারের নিয়ন্ত্রণ নেন নিজেদের বিএনপি নেতা দাবি করা ছয়জন। তারা স্থায়ী প্রতি দোকান থেকে ১৫০০-৪০০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক চাঁদা আদায় করছেন।
নিজেদের বিএনপি নেতা দাবি করা ব্যক্তিরা হলেন মৃত রায়হানের ছেলে আব্দুল কুদ্দুস খাঁ ও ইদ্রিস আলী খাঁ, মৃত লোকমান হোসেনের ছেলে বাচ্চু মেম্বার, শামসুল খানের ছেলে শহিদুল্লাহ, মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মতিউর রহমান রঞ্জু ও আনিসুর রহমান রবুর ছেলে সুইট। এদের সবার বাড়িই মাধপুর গ্রামে।
এ বিষয়ে মাধপুর বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জনাব আলী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আরশেদ আলী ভান্ডারী সব ভাড়া তুলতেন এবং বাজার নিয়ন্ত্রণ করতেন। এখন নিয়ন্ত্রণ করছেন বিএনপির কথিত ছয় নেতা। বিষয়টি সবাই জানলেও কেউ বলার সাহস পান না।’
চাঁদা আদায়কারীদের একজন মতিউর রহমান রঞ্জু। তিনি দাবি করেন, এটা তাদের সম্পত্তি। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান। তাই তারা ভোগ-দখল করে দোকানের ভাড়া তুলছেন।
এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুল বলেন, ‘এদের বেশিরভাগই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে কেউ কেউ সক্রিয় নয়। অনেকেই জায়গাগুলোকে নিজেদের মালিকানা দাবি করেছেন বলে জেনেছি। বিস্তারিত কিছু জানি না। কয়েক বছর উপজেলায় বিএনপির কমিটি না থাকায় দলীয় তেমন তদারকিও নেই।’
উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাতুল হক বলেন, এক মাস আগে অভিযোগ পেয়েছিলাম। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
জানতে চাইলে পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআর/জেআইএম