খুলনায় তিন শতাধিক ব্যক্তির নামে মামলা, জানে না বাদী

2 hours ago 5
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর খুলনার পাইকগাছায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান সরকারি বিএল কলেজের রকিবুল হাসান রকি। এ ঘটনাকে পরিকল্পিত দাবি করে আওয়ামী লীগ নেতা, সমাজকর্মী, সাংবাদিকসহ ৩১৫ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেন রকির বাবা রফিকুল ইসলাম। ২১ নভেম্বর চিফ প্রসিকিউটরের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে যা শুনানীর অপেক্ষায় রয়েছে। মামলার অভিযোগে নিহতের বাবা উল্লেখ করেন, গত ৫ আগস্ট সকালে চাঁদখালী গ্রামে ছাত্র-জনতা মিছিল করে। ওই মিছিলে আওয়ামী লীগ হামলা ও গুলিবর্ষণ করলে অনেকেই আহত হন। কিন্তু আন্দোলন দমাতে ব্যর্থ হয়ে আসামিরা আন্দোলনকারীদের বিদ্যুৎস্পর্শে মারার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চাঁদখালীর বিভিন্ন পয়েন্টে রাস্তার মাঝে পড়ে থাকা বাঁশ ও বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে কাঁচা বাঁশের মাথায় বাঁধা পতাকা হাতে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় রকি বিদ্যুৎস্পর্শে মারা যান। ঘটনাস্থল খুলনা শহর থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে হলেও মামলায় খুলনা মহানগর জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা। সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর, সাংবাদিক, সমাজকর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক ও আইনজীবী রয়েছে। আন্দোলনে ছাত্রদের পক্ষে ছিল এমন ব্যক্তিও রয়েছেন এই মামলায়। তবে কালবেলার অনুসন্ধানে দেখা যায়, মামলার বাদী নিহত রাকিবুল ইসলাম এর বাবা মো. রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষর করতেও পারেন না। এমনকি মামলার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।  রোববার (২৪ নভেম্বর) কালবেলার প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় রফিকুলের। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগে ১টি মোটরসাইকেলে তিনজন ছেলে এসে নিজেদের সমন্বয়ক পরিচয় দেয়। তারা রাকিবুলের কবর বাধায় ও শহীদ কার্ড করার জন্য কাগজপত্র চায়। এই শুনে আমার মেয়ে তাদের রকিবুলের মৃত্যু সার্টিফিকেট দেয়। এসময় তারা সাহায্য দেওয়ার আশ্বাসে চলে যায়। এর ৫ দিন পর শুনলাম আমি নাকি কত মানুষের নামে মামলা করেছি। আমার ছেলে আন্দোলন করেছে এটা পাইকগাছার সবাই জানে। কিন্তু তার মৃত্যু নিয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। মামলায় আসামি করা হয়েছে আসাদ নামে একজন স্বেচ্ছাসেবক কালবেলাকে বলেন, আমরা খুলনা ব্লাড ব্যাংক ও খুলনা ফুড ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষের পাশে থাকি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের প্রথম সারির সব মিডিয়ায় আমাদের সেবামূলক কাজ নিয়ে অনেক ইতিবাচক সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। আমাদের কোনো রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা নেই। বরং বিগত আন্দোলনের সময় আমরা আমাদের সাধ্যমতো ছাত্রদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। বিগত সরকারের আমলে আমাদের একটি দলের ট্যাগ লাগিয়ে কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হতো। এখন আবার উলটো মামলা হলো। বিষয়টির সঙ্গে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ধরনের মিথ্যা মামলা প্রকৃত অপরাধীদের আড়ালের চেষ্টা হতে পারে।
Read Entire Article