ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের (এন-১০৫) প্রথম ধাপের ১৮ কিলোমিটার অংশ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার (২৪ আগস্ট) সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এটি উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনের আগে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুর ১২টা থেকে এই অংশ পরীক্ষামূলকভাবে তিন দিন টোল ফ্রি চালু করা হয়।
জানা যায়, ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২২ সালের মে মাসে। ভোগড়া বাইপাস থেকে মদনপুর পর্যন্ত বিস্তৃত এই প্রকল্পের ৭৬ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পুরো এক্সপ্রেসওয়ে হস্তান্তরের সময়সীমা ২০২৬ সালের জুন।
প্রকল্পের সেফটি ইঞ্জিনিয়ার ফারদিন ইমাম জানান, ১৮ কিলোমিটার অংশের নির্মাণ প্রায় শেষ, তাই যান চলাচলের জন্য তা খুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে নিরাপত্তা ও গতি নিশ্চিত করতে এক্সপ্রেসওয়েতে সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে এই অংশে কোনো ইউটার্ন থাকবে না বলেও জানানো হয়।
যানবাহনের ধরন অনুযায়ী টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৮ কিলোমিটার অংশে আংশিকভাবে টোল আদায় শুরু হচ্ছে।
টোল হার হচ্ছে- বড় ট্রাক (ট্রেলার, ৬-এক্সেল, ১৫-২৫ টন) ৭৪০ টাকা,ভারী ট্রাক (২-৩ এক্সেল, ৭+ টন) ৬১০টাকা, মাঝারি ট্রাক (৫-৭ টন) ৪০০ টাকা, বড় বাস (৩১ সিট বা তদূর্ধ্ব) ৩১০ টাকা, ছোট ট্রাক (৩ টন) ২৬০ টাকা,ছোট বাস (৩১ সিটের নিচে) ২১০ টাকা, মাইক্রোবাস ১৯০ টাকা, পিকআপ, জিপ, রেকার, ক্রেন (৩ টন) ১৮০ টাকা ও সেডান প্রাইভেটকার ১৫০ টাকা।
সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ আশা করছে, ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের এই অংশ চালু হলে রাজধানীর আশপাশের যানজট কিছুটা হ্রাস পাবে। একই সঙ্গে পণ্য পরিবহন আরও দ্রুত, সাশ্রয়ী ও কার্যকর হবে।যানজট কমাবে, বাড়াবে অর্থনৈতিক গতি।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুরো এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে এটি দেশের উত্তরাঞ্চলের জন্য একটি বিকল্প রুট হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজীপুর অংশের ভোগড়া হতে পূর্বাচল পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার টোল সড়ক নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। একইসঙ্গে গাজীপুরের ভোগড়া হতে নারায়ণগঞ্জের বস্তুল পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার সার্ভিস সড়কের অধিকাংশের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ সড়কের বিভিন্ন অংশে দুইটি রেলওয়ে ওভারপাস (ধীরাশ্রম ও মীরেরবাজার) এবং কাঞ্চন, নাগদা , উলুখোলাসহ ৮টি সেতু নির্মাণকাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। কাঞ্চন হতে ভুলতা পর্যন্ত অংশে টোল সড়কের নির্মাণকাজ চলমান আছে। ভুলতা থেকে মদনপুর পর্যন্ত অংশে মাটি ভরাটসহ অন্যান্য কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের বর্তমান অগ্রগতি ৭০ শতাংশ। নারায়ণগঞ্জ অংশে ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি শিফটিং ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হলে ২০২৬ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পের অবশিষ্ট নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে।
মো. আমিনুল ইসলাম/এমএন/জেআইএম