ইরাকে একটি গণকবরের সন্ধান মিলেছে। তাতে প্রায় ১০০ জনের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব দুর্ভাগা কুর্দি জনগোষ্ঠীর।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) আরব নিউজসহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে খবর প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, দক্ষিণ ইরাকের মুসান্না প্রদেশের তা’ল আল-শাইখিয়া এলাকায় গণকবরটি পাওয়া গেছে। সেখানে কুর্দি নারী ও শিশুর মরদেহও রয়েছে।
ইরাকের কর্মকর্তারা বলছেন, ১৯৮০-এর দশকে তাদের হত্যা করা হতে পারে। খুব সম্ভবত সাবেক ইরাকি শাসক সাদ্দাম হোসেনের নির্দেশে এ নারকীয় কাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
গণকবরের তদন্তে নিয়োজিত ইরাকি কর্তৃপক্ষের প্রধান দিয়া করিম বলেন, প্রধান সড়ক থেকে প্রায় ১৫-২০ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। একটি বিশেষজ্ঞ দল এ মাসের শুরুতে কবরটি খননের কাজ শুরু করে। দেহাবশেষ ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য অন্যত্র নেওয়া হচ্ছে। এ স্থানে এর আগেও গণকবর পাওয়া গেছে। এটি দ্বিতীয় গণকবর।
তিনি আরও বলেন, ‘মাটির প্রথম স্তর অপসারণ করার পর এ গণকবরটি আবিষ্কৃত হয়। এখানকার লাশগুলো নারী ও শিশুদের। এদের সবার পরনে কুর্দি বাসন্তী পোশাক রয়েছে। এখনো যেহেতু লাশ উত্তোলন চলছে সেহেতু প্রকৃত সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’
দিয়া করিম বলেন, কবরে পাওয়া অনেককে খুব কাছ থেকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। এমনকি কাউকে কাউকে জীবিত কবর দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।
কারণ হিসেবে তিনি দেহাবশেষের বর্ণনা দেন। জানান, সেসব দেহে গুলির কোনো চিহ্ন নেই।
প্রসঙ্গত, সাদ্দামের সরকার আনফাল অপারেশন নামে ভয়ংকর এক অভিযান চালান। এ অভিযানের নামে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার কুর্দিকে হত্যা করেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৮৮ সালের মধ্যে নির্মম এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এ ছাড়া তখন বহু মানুষ আহত হন। নিখোঁজ হন হাজার হাজার। ধারণা করা হচ্ছে, ইরাকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গণকবরেই নিখোঁজ বা গুম মানুষদের ঠাঁই হয়েছে।
এদিকে বর্তমানেও কুর্দিরা শান্তিতে নেই। তুরস্কের হামলায় প্রতিনিয়ত কুর্দিরা মারা পড়ছেন। সম্প্রতি কুর্দি যোদ্ধাদের শেষ পরিণতির বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তিনি বলেন, কুর্দি যোদ্ধারা আত্মসমর্পণ না করলে তাদের জীবন্ত কবর দেওয়া হবে।
এরদোয়ান বলেন, সিরিয়ায় থাকা কুর্দি যোদ্ধাদের হয় অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। যদি তারা তা না করে তাহলে তাদের জীবন্ত কবরস্থ করা হবে। চলতি মাসে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের পতনের পর তুর্কিপন্থি যোদ্ধা ও মিলিশিয়া গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা চলাকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাদ সরকারের পতনের পর কুর্দি যোদ্ধাদের বিলোপের বিষয়ে আঙ্কারা বারবার জোর দিয়ে আসছে। তারা বলছে, সিরিয়ায় এ গোষ্ঠীর ভবিষ্যতে কোনো স্থান হবে না।